ঝিনাইদহ ভেটেরিনারি কলেজের পিসিআর ল্যাবটি ৪ বছর ধরে অকেজো
স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ- করোনায় মানুষের জীবন যখন বিপন্ন। পরীক্ষার অভাবে যখন মৃত্যুর পর নমুনা সংগ্রহ করে যখন কুষ্টিয়া বা যশোরে পাঠাতে হচ্ছে তখন ঝিনাইদহে আধুনিক ও উন্নতমানের পিসিআর ল্যাব থাকলেও তা এই অতিমহামারির মধ্যে চালু করা হচ্ছে না। ফলো করোনা আক্রান্ত রোগীদের ছুটে যেতে হচ্ছে কুষ্টিয়া ও যশোরে। তথ্য নিয়ে জানা গেছে, ২০১৭ সালে ঝিনাইদহ সরকারি ভেটেরিনারি কলেজে ভাইরোলজী বিভাগে পিসিআর মেশিন বসানো হয়। কিন্তু বায়োসেপটিক ক্যাবিনেট ও দক্ষ জনবলের অভাবে তা চালু করা যাচ্ছে না।
বিষয়টি জানার পর ঝিনাইদহ সচেতন মহলে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। কর্তৃপক্ষের চরম উদাসীনা ও স্বদিচ্ছার অভাবেই ল্যাবটি চালু হচ্ছে না বলে মনে করছেন সচেতন মহল। এদিকে ঝিনাইদহ জেলায় পিসিআর ল্যাব স্থাপনের জন্য প্রায় সময় মানববন্ধন ও সভা সমাবেশ করে যাচ্ছে বিভিন্ন সংগঠন।
ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের করোনা ইউনিটের প্রধান চিকিৎসক ডাঃ জাকির হেগাসেন জানান, সঠিকভাবে বেশী সংখ্যক নমুনা পরীক্ষায় পিসিআর ল্যাবের গুরুত্ব অপরীসিম। তিনি বলেন সীমান্তবর্তী জেলা ঝিনাইদহে গতিতে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার বাড়ছে।
গেল ২৪ ঘন্টায় ঝিনাইদহে করোনা আক্রান্ত হয়ে ২ জন এবং উপসর্গ নিয়ে ৫ জনসহ মোট ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। ২৪২ টি নমুনা পরীক্ষা করে ১১৫ জনের দেহে করোনা সনাক্ত হয়েছে। নমুনা পরীক্ষায় সনাক্তের হার ৪৭.৫২ %। এছাড়া এখন পর্যন্ত জেলায় করোনা সংক্রমণের হার ২৬.১১% এবং গেল এক মাসে সংক্রমণের এ হার ৩৮.১১%। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাড়িয়েছে ৪৩৪৫ জন।
দ্রুত ও নির্ভুলভাবে বেশী সংখ্যক নমুনা পরীক্ষার জন্য পিসিআর ল্যাবের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় সরকারি ভেটেরিনারী কলেজের পিসিআর মেশিন ও ল্যাব চালুর দাবী জানান তিনি। ২০১৭ সালের প্রথম দিকে ভাইরোলজী বিভাগে পিসিআর মেশিন আনা হলেও ৪ বছর ধরে পড়ে আছে। সরকারি ভেটেরিনারি কলেজের অধ্যক্ষ ডাঃ গণেশ চন্দ্র মন্ডল খবরটি নিশ্চিত করে জানান, কলেজে একটি পিসিআর মেশিন থাকলেও তা দিয়ে করোনা পরিক্ষা করা যায় কিনা বলতে পারবো না। কারণ এখানে করোনার পরীক্ষার জন্য ল্যাবে যে বায়োসেপটিক ক্যাবিনেট থাকা দরকার সেটা নেই। নেই দক্ষ জনবল।
বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটারের সমন্বয়কারী একরামুল হক লিকু বলেন, সরকারি ভেটেরিনারী কলেজে পিসিআর মেশিন ও ল্যাব থাকা সত্তে¡ও সেটি কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় পড়ে আছে। এ মহামারীতেও ল্যাবটি চালু করা যায়নি, এটি খুবই দু:খজনক। ঝিনাইদহ সদর হাসপাতলের তত্ত¡াবধায়ক ডা: হারুন অর রশিদ বলেন , আমরা নমুনা সংগ্রহ করে কুষ্টিয়ায় পাঠায় আর হাসপাতালে এন্টিজেন টেস্টে এর মাধ্যমে পরিক্ষা করানো হয়। অথচ ঝিনাইদহ সরকারি ভেটেরিনারি কলেজের ল্যাবটি চালু হলে রোগীরা দিনের রিপোর্ট দিনেই পেয়ে যেতো।