পাল্টা হামলা ঠেকাতে ছত্রপাড়ার দুগ্রুপের ৩ জনকে আটক
আলমডাঙ্গার ছত্রপাড়ার শরিফ জোয়ার্দ্দারসহ দুগ্রুপের ৩ জনকে আটক করে জেল হাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ। বিবাদমান জমি নিয়ে রাতে কুপিয়ে জখমের পর পাল্টা হামলা ঠেকাতে তাদেরকে আটক করা হয়।
জানা যায়, আলমডাঙ্গার ছত্রপাড়া গ্রামের ধনাঢ্য ক্ষিতীশ মজুমদার ’৪৭ সালের দেশ বিভাগের আগে বাড়িঘর-সহায় সম্পত্তি ছেড়ে ভারতে চলে যান। পরবর্তিতে তার রেখে যাওয়া ১৫২ বিঘা জমি শত্রু সম্পত্তি ও বাংলাদেশে পরবর্তিতে অর্পিত সম্পত্তিতে পরিণত হয়। এই বিরাট সম্পত্তির লোভে ছত্রপাড়া ও অভয়নগর দুগ্রামবাসি দুটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে দখলের প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হয়।
সম্পত্তি দখলের জন্য পরষ্পর গ্রুপের রক্ত ঝরাতে তারা রক্তলোলুপ হয়ে ওঠেছে। এ বিবাদে প্রতিপক্ষের হাতে প্রাণ গেছে কয়েকজন গ্রামবাসির। আহত-পক্ষু হয়েছেন অনেকে। যুগের পর যুগ ধরে চলমান এ দ্বন্দ্ব। ক্ষিতীশ মজুমদারের ১৫২ বিঘা জমির মধ্যে বেশ কিছু জমি অনেকে জাল দলিল তৈরি করে নিয়ে দখলের অপচেষ্টা করে আসছে। যখন যে দল ক্ষমতায় থাকেন, তাদের পাতি নেতারা রাজনৈতিকভাবে প্রভাব বিস্তার করে, থানা পুলিশের উপর প্রভাব বিস্তার করে সমস্ত সম্পত্তি নিজেরা দখলের অপচেষ্টা করেন। প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে নানা অপবাদ ও দোষারোপ করে তাদের ঘরবাড়ি ছাড়া করে নেতা উপনেতারা নিজেদের মনস্কাম পূরণের অপচেষ্টা করেন।
এই নিয়ে বিবাদ যুগ থেকে যুগান্তরব্যাপি বিস্তৃত হতে থাকে। গত কয়েক মাস আগে এ জমি নিয়ে আবারও বিবাদমান দুপক্ষের ভেতর রক্তক্ষয়ি সংঘর্ষ হয়েছে। ছত্রপাড়ার মধু মেম্বর তার লোকজন নিয়ে বিবাদমান জমিতে তার চাষ করা কচু তুলতে গেলে প্রতিপক্ষ লাল খাঁ গ্রুপ ফালা, থ্রোকচ, রামদা ও তলোয়ার নিয়ে হামলা করে ৫ জনকে রক্তাক্ত জখম করে।
এলাকাসূত্রে জানা যায়, আলমডাঙ্গার ছত্রপাড়ার বিবাদমান ১৫২ বিঘা অর্পিত সম্পত্তির নিজেদের দখলে নিতে এক পক্ষের নেতৃত্ব দিচ্ছেন আওয়ামীলীগ নেতা শরিফ জোয়ার্দ্দার ও অন্যপক্ষে বর্তমানে নেতৃত্বে আছেন ছত্রপাড়া গ্রামের লাল খাঁ। বিরোধি গ্রুপের জমিতে ধান লাগানোর জন্য চারা দেওয়ার বিষয়ে গত ১২ জুন দুপুর আড়াইটায় শরিফ জোয়ার্দ্দার গ্রুপ স্থানীয় ছত্রপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আলোচনা করছিল। সে সময় বিরোধি পক্ষের শহিদুল পাঠান ও তার স্ত্রী বিষয়টি ভিডিও ধারণ করছিলেন। এ ঘটনা দেখে ফেলে শরিফুল জোয়ার্দ্দার গ্রুপ তাদের তাড়া করে ও শহিদুল পাঠানকে মারধর করেন। এরই জের ধরে রাত পৌণে ৩ টার দিকে লাল খাঁ গ্রুপের জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে প্রতিপক্ষের উপর হামলা চালিয়ে শরিফুল জোয়ার্দ্দার পক্ষের মৃত মুলুক চাঁদের ছেলে ফজলুল হককে কুপিয়ে রক্তাক্ত করে।
এ ঘটনার জের ধরে প্রতিশোধ নিতে দু গ্রুপই দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হচ্ছিল। সংবাদ পেয়ে পুলিশ এক পক্ষের নেতা শরিফুল জোয়ার্দ্দারসহ উভয় পক্ষের মোস্তাফিজুর ও সাইফুল ইসলামকে আটক করে জেল হাজতে পাঠিয়েছে।