ঝিনাইদহ সীমান্তে ব্যাপক ভাবে বাড়ছে অবৈধ পারাপার, ৫ মাসে আটক ৮৯৮!
জাহিদুর রহমান তারিক, স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ- ঝিনাইদহের মহেশপুর সীমান্তো জেলা প্রশাসনের জরুরী বিধি নিষেধ ও বিজিবির কঠোর নজরদারীর মধ্যেই ব্যাপক হারে মানুষ বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। এই অবৈধ পারাপারে দুই দেশের দালালরা নিয়োজিত। বৃহস্পতিবার ও ৬ জন অনুপ্রবেশকারিকে আটক করেছে বিজিবি। মহেশপুর উপজেলার জুলুলী ও বৃত্তিপাড়া গ্রাম থেকে তাদের আটক করা হয় বলে মহেশপুর ৫৮ বিজিবির সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম খান বৃহস্পতিবার এক ই-মেইল বার্তায় জানান।
এরমধ্যে যশোরের শার্শা উপজেলার সোহেল রানা, ঝিকরগাছা উপজেলার পদ্মপুকুর গ্রামের আলামিন, স্ত্রী রোখসানা বেগম ও মেয়ে হাবিবা খাতুনকে অবৈধ পথে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশের সময় ও সিরাজগঞ্জের দারিয়াপুর গ্রামের যতিন মদক, স্ত্রী কামনা মদক ও ছেলে লিখন মদককে ভারতে প্রবেশের সময় আটক করে বিজিবি। সীমান্তের গ্রামবাসীর অভিযোগ, কোন ভাবেই এই জনশ্রোত থামানো যাচ্ছে না। সন্ধ্যার পর দালালের নিয়োজিত সদস্যরা গ্রামে গ্রামে সক্রিয় হয়ে ওঠে। তারা বিজিবির চোখ ফাঁকি দিয়ে অবৈধ পারাপারে লিপ্ত হয়।
ঝিনাইদহের মহেশপুরে ভারতের সীমান্ত রয়েছে ৭০ কিলোমিটার। এর মধ্যে কাঁটাতারবিহীন এলাকা প্রায় সাড়ে ১০ কিলোমিটার। এসব এলাকা দিয়ে মুলত অবৈধভাবে মানুষ যাতায়াত করে। এদিকে বিজিবির হাতে আটক হয়ে ২/১দিন পরই অনুপ্রবেশকারীরা পাসপোর্ট আইনের দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে ছাড়া পেয়ে যাচ্ছে। এমন অবৈধ পারাপার করোনার ভারতীয় ধরন ছড়ানোর ক্ষেত্রে ঝিনাইদহ জেলা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ বলে চিকিৎসকরা জানান। বেশ কয়েকদিন মহেশপুর সীমান্তের বিভিন্ন গ্রামে অনুসন্ধান করে মানুষ পরাপারের চাঞ্চল্যকর তথ্য মিলেছে। মহেশপুরের ৫৮ বিজিবি থেকে পাওয়া তথ্যমতে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ১০ জুন পর্যন্ত ৮৯৮ জনকে আটক করেছে বিজিবি।
তাদের বিরুদ্ধে সীমান্তবর্তী মহেশপুর থানায় পাসপোর্ট আইনে ১৬০ টি মামলা দেয়া হয়েছে। জানুয়ারি মাসে ১৭৫ জন, ফেব্রæয়ারীতে ২৭০, মার্চে ২২২, এপ্রিল ১০৬, মে মাসে ৫৮ জন ও জুন মাসের ১০ দিনে ৬৭ জন আটক হয়েছে। গত ২৬ এপ্রিল থেকে বাংলাদেশ থেকে বৈধ পথে ভারতে যাওয়া বন্ধ থাকার কারণে অবৈধ পথে যাতায়াত বৃদ্ধি পেয়েছে। এসব অবৈধ অনুপ্রবেশের ফলে ঝিনাইদহের সীমান্ত এলাকায় করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ছে। সেখানে একই পরিবারে ৬ জন আক্রান্ত হয়েছে। তাছাড়া জুন মাসের ১০ দিন ১২৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
এর মধ্যে মারা গেছেন ২ জন। বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহের মহেশপুর ৫৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের পরিচালক লে. কর্নেল কামরুল আহসান বলেন, সীমান্তে বিজিবি টহল জোরদার করা হয়েছে। অবৈধ পথে কেউ যেন বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না পারে এজন্য সীমান্তে বসবাসকারীদের সহযোগিতা চাওয়া হচ্ছে। তাদের সীমান্ত অতিক্রম না করার জন্য বলা হয়েছে।