৯ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৪শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ক্যালিফোর্নিয়ার বিশ্বখ্যাত abbvie ফার্মার উর্ধ্বতন বিজ্ঞানী এখন আলমডাঙ্গার মাসুদ পারভেজ

প্রতিনিধি :
শরিফুল ইসলাম রোকন
আপডেট :
মে ২৭, ২০২১
138
বার খবরটি পড়া হয়েছে
শেয়ার :
| ছবি : 


বিশ্বের ৭তম বৃহত্তম আমেরিকান ওষুধ কোম্পানী abbvie - তে ঊর্ধ্বতন বিজ্ঞানি হিসেবে যোগ দিলেন চুয়াডাঙ্গা-আলমডাঙ্গার সন্তান আমেরিকা প্রবাসী ড. মো: মাসুদ পারভেজ। সারা বিশ্বে নতুন ওষুধের ডিসপোজিশন ও মেটাবলিজম নিয়ে গবেষণায় সামান্য কয়েকজন বাংলাদেশী বিজ্ঞানীর মধ্যে ড. মাসুদই এই প্রথম কোনো বিশ্বখ্যাত ওষুধ কম্পানির ঊর্ধ্বতন বিজ্ঞানী হিসাবে যোগ দেয়ার সুযোগ পেয়েছেন। গত সোমবার তিনি বিশ্ববিখ্যাত এ ফার্মাসিউটিক্যালসে যোগদান করেন।


১৮৮০ সালে প্রতিষ্ঠিত শিকাগোভিত্তিক ওষুধ ও মেডিক্যাল ডিভাইস প্রস্তুত প্রতিষ্ঠান A bbott Laboratories -র সহযোগী প্রতিষ্ঠান হলো abbvie, যেখানে প্রায় ৪৮০০০ মানুষ কাজ করে এবং বিশ্বের প্রায় ১৯০ টির ও বেশি দেশে ওষুধ বাজারজাত করে। এই ফার্মাসিউটিকেলস-এ স্টাফদের জন্য রয়েছে সর্বোৎকৃষ্ট প্লাটফর্ম, যেখানে পৃথিবীর মেধাসম্পন্ন চিকিৎসা বিজ্ঞানিরা স্বতঃস্ফুর্তভাবে কাজ করতে পারেন।

এটি এমন একটি প্রতিষ্ঠান যারা সব সময় মানবদেহের বিভিন্ন জটিল রোগের ঔষধ তৈরির গবেষণা ও প্রস্তুতের কাজ করে থাকে। এ জন্য তাদের রয়েছে পৃথক একটি শক্তিশালি রিসার্স ডেভলাপমেন্ট ইউনিট। এই ফার্মা ক্যান্সার, অ্যান্টিভাইরাল ইমুনোলজি, চোখ ও নিউরোডিজিজ এ ১১৭টি নিজেস্ব আবিষ্কার করা (পেটেন্ট) ঔষধ রয়েছে। যে ঔষধগুলি আমেরিকাসহ বিশ্বের ৭০টিরও বেশি দেশে ঔষধ গবেষণা ও উৎপাদন সেন্টারে ৯ হাজার বিজ্ঞানি প্রতিনিয়ত নতুন ঔষধ তৈরিতে কাজ করে থাকেন।


মাত্র ৩৬ বছরের টগবগে তরুণ চিকিৎসা বিজ্ঞানি ড. মাসুদ দক্ষিণ কোরিয়া থেকে ক্লিনিক্যাল ফার্মাকোলোজিতে পি এইচ ডি ডিগ্রী অর্জনের পর নতুন ওষুধ গবেষণা ও শিক্ষকতার সাথে জড়িত ছিলেন। গত কয়েক বছর দক্ষিণ কোরিয়ার ইন্জে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিক্যাল কলেজ, টরেন্টো বিশ্ববিদ্দ্যালয় (কানাডা) ও ওয়াশিংটন স্টেট বিশ্ববিদ্দ্যালয়ে (আমেরিকা) শিক্ষকতা করেছেন। সেই সাথে বিভিন্ন বিশ্বখ্যাত ওষুধ কোম্পানির নতুন ওষুধ গবেষণার সাথে চুক্তিবদ্ধ গবেষণাও করেছেন। সেই ধারাবাহিকতায় অননারব -তে ঊর্ধ্বতন বিজ্ঞানি হিসেবে এবার ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের সানফ্রান্সিস্কো- তে অবস্থিত অননারব-র নতুন রিসার্চ ও ডেভেলপমেন্ট টীম এ যোগ দিলেন।


ড. মাসুদ মূলত একটি ওষুধ পেশেন্টের শরীরের দেওয়ার পর সেটা কীভাবে শরীরে বিচরণ ও মেটাবলিজম হয়ে শরীর থেকে বের হয় এবং কীভাবে অন্য ঔষুধের সাথে প্রতিক্রিয়া করে সেটা নিয়ে গবেষণা করেন। তিনি ও তার টীম অননারব থেকে যেসব নতুন ওষুধ গবেষণা ও অনুমোদনের জন্য প্রস্তুত করা হবে সেগুলোর গবেষণা করে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল এ সহযোগিতা করবেন। যেকোনো নতুন ওষুধ আবিষ্কার ও অনুমোদনের ক্ষেত্রে এই গবেষণা অপরিহার্য ও এই গবেষণা ডাটা ব্যতিত কোনো নতুন ওষুধ অনুমোদন সম্ভব হয় না।


তাছাড়া, ইতোপূর্বে তিনি আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন অফ ফার্মাসিউটিক্যাল সায়েন্টিস্টস (এএপিএস)’র মেম্বার এনগেজমেন্ট ম্যানেজার নির্বাচিত হয়েছেন। আলমডাঙ্গার সন্তান ড. মাসুদ পারভেজ। এই সংগঠনের বর্তমান মেম্বার সংখ্যা প্রায় ৮৯০০০ এবং লিডারশীপ পজিশন ৩২০।

এই ৩২০ জনের মধ্যে সিস্টেম ফার্মাকোলজি কম্যুনিটির ‘মেম্বার এনগেজমেন্ট ম্যানেজার’ হিসেবে ২০২০-২০২১ সময়ের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত হন তিনি। এএপিএস সারা বিশ্বের ওষুধ বিজ্ঞানীদের সর্বোচ্চ সংগঠন যারা গবেষণা, শিক্ষা ও নতুন ওষুধ উৎপাদন বিজ্ঞানে ফান্ডিং, বৃত্তি, ফেলোশিপ ও বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডে অবদান রাখে। প্রতিবছর এই সংগঠন বিশ্বের সব থেকে বৃহত বাৎসরিক কনফারেন্সের আয়োজন করে থাকে। এই সংগঠনের মাধ্যমে নতুন ওষুধ আবিষ্কার ও নতুন নতুন বিজ্ঞানের বিষয় ও আবিষ্কার নিয়ে আলোচনা ও বিজ্ঞানিরা লেকচার প্রদান করেন।


আলমডাঙ্গার বাদেমাজু গ্রামের আয়ুব আলী ও ফেরদৌসী খাতুনের একমাত্র ছেলে মাসুদ পারভেজ। তাছাড়া পাঁচলিয়া জামাল উদ্দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তৈয়ব আলীর ভাতিজা। বর্তমানে পারিবারিকভাবে ১ সন্তান ও ওষুধ বিজ্ঞানী স্ত্রী নিয়ে আমেরিকার সানফ্রান্সিসকো তে বসবাস করছেন। তার এই সাফল্যের পেছনে সকল শিক্ষক, পরিবার ও শুভানুধ্যায়ীদের কাছে বিশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এ সময় তিনি নিজ এলাকা থেকে বিদেশে উচ্চশিক্ষা ও কর্মজীবনে পরিশ্রমী মেধাবীদের পাশে থাকার দৃঢ়তা ব্যক্ত করেন।

সর্বশেষ খবর
menu-circlecross-circle linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram