আলমডাঙ্গায় ইউএনও’র নাম ভাঙিয়ে দুটি বেকারী মালিকের কাছে চাঁদা দাবি
আলমডাঙ্গার ইউএনও’র নাম ভাঙিয়ে দুটি বেকারী মালিকের কাছে ভ্রাম্যমান আদালতে জরিমানা করা হবে না শর্তে টাকা চাওয়া হয়েছে। ২৫ মে রাত ৯ টার দিকে ইউএনও পরিচয়ে ওই দুই বেকারী মালিকের কাছে টাকা চাওয়া হয়। এর আগে ইউএনও পরিচয়ে দুই ওয়ার্ডের সাবেক দুই কাউন্সিলরের কাছ থেকে তাদের মোবাইল নাম্বার নিয়ে নেওয়া হয়।
জানা গেছে, রাত ৯ টার দিকে প্রথমে আলমডাঙ্গা পৌরসভার তিন নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর দিনেশ কুমারের কাছে ইউএনও পরিচয়দানকারি তার ওয়ার্ডে মোট কয়টা বেকারী রয়েছে জানতে চায়। ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হবে বলে বেকারী মালিকের মোবাইল নাম্বার জানতে চান। দিনেশ কুমার মডার্ন বেকারী মালিক মিলনের নাম্বার দিয়ে দেন। এবং তিনি নিজেও ইউএনও’র ভ্রাম্যমান পরিচালনার বিষয়টি মিলনকে অবহিত করেন।
এর কিছুক্ষন পরই ইউএনও পরিচায়দানকারি ০১৬৬০-১৫১৩১১ নাম্বারে মিলনকে কল করে বলেন, আমি আলমডাঙ্গা থানার ইউএনও। ঢাকা থেকে ম্যাসেজ এসেছে, আলমডাঙ্গার সব বেকারিতে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে জরিমানা করতে বলা হয়েছে। আমরা ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা করছি। এ সময় ইউএনও পরিচায়দানিকারি বেকারী মালিক মিলনকে একটু সুযোগ দেয়ার কথা বলে জানান, আপনি চাইলে কিছু কম টাকা দিয়ে আপনার নাম কাটিয়ে নিতে পারেন। এবং তার নাম্বারে ৮ হাজার ২শ টাকা বিকাশ করে দিতে বলেন। এ সময় বেকারি মালিক মিলন পরদিন সকালের দিকে অফিসে গিয়ে টাকা দিয়ে আসার প্রস্তাব দিলে ইউএনও পরিচয়দানকারি তা নাকচ করে দিয়ে বলেন, এসব অফিসে আলোচনা করা যাবে না। এক্ষনই বিকাশে টাকা পাঠিয়ে দিতে আদেশ দেন।
এরপর ০১৭৬৫-৪৫৪১৪৮ নাম্বার থেকে পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ইলিয়াছ হোসেনের কাছে একইরকমভাবে তার ওয়ার্ডের বেকারি মালিকের নাম্বার চান ইউএনও পরিচয়দানকারি। ইলিয়াস হোসেন নাম্বার দেন ক্যানেলপাড়ার মনিফুডের মালিক মনিরুজ্জামান মনি। তাকেও ভ্রাম্যমান আদালতে অতিরিক্ত জরিমানার ভয় দেখিয়ে টাকা দাবি করা হয়। টাকা না দিলে তক্ষনই ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে বলেও হুমকি দেয় ইউএনও পরিচয়দানকারি। মনিরুজ্জামান মনি সকাল পর্যন্ত সময় চাইলে ইউএনও পরিচয়দানকারি এখনই অভিযান চালানো হবে বলে জানান।
হুমকি পেয়ে সন্দেহ হলে দুই বেকারি মালিক মিলন ও মনি থানায় অভিযোগ করেন। পুলিশ প্রায় সংগে সংগে জানতে পারে ভ্রাম্যমান আদালতে জরিমানার হুমকি প্রদানকারি ভুয়া ইউএনও।
এ ব্যাপারে সাবেক কাউন্সিলর দিনেশ কুমার বলেন, আমার কাছে আলমডাঙ্গার ইউএনও পরিচয় দিয়ে বেকারি মালিকের নাম্বার চান। আমি সরল বিশ^াসে মডার্ন বেকারির মালিক মিলনের নাম্বার দিয়েছি।
আলমডাঙ্গা থানার ওসি আলমগীর কবীর বলেন, ভুয়া ইউএনওকে পাকড়াও করতে পুলিশ মাঠে নেমেছে।
এবিষয়ে আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার পুলক কুমার মন্ডল বলেন, বিষয়টি আমি জানতে পেরে থানার অফিসার ইনচার্জকে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছি।