রমজান মাসে স্বাস্থ্য বিষয় নিয়ে বললেন ডাঃ মোঃ আমিনুল ইসলাম সোহেল
সবাই কে পবিত্র মাহে রমজান এর শুভেচ্ছা রমদানুল মোবারক জানান ডাঃ মোঃ আমিনুল ইসলাম সোহেল আর এম ও, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লক্স, তাড়াশ, সিরাজগঞ্জ।তিনি বলেন কোভিড-১৯ নোভেল করোনা ভাইরাসের ২য় ঢেউ এ নানা রকম কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে আমাদের সময় পার করতে হচ্ছে। এছাড়াও বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক বিভিন্ন সরকারি বিধি বিধান ও নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। আমাদের সবাইকে সুস্থ্য থাকতে হলে ঘরে থাকতে হবে এবং প্রয়োজনে ঘরের বাহিরে গেলে মাস্ক পরিধান করতে হবে এছাড়াও সরকারি নির্দেশনা মানতে হবে। দৈনিক সিংড়া বার্তাকে ডাঃ মোঃ আমিনুল ইসলাম জানান যে, আমাদের দেশে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ বসবাস করেন। আমাদের দেশের দেশনেত্রীর অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ আজকে উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তর হয়েছে।আমাদের সামনে আবারও বছর ঘুরে পবিত্র মাহে রমজান চলে এসেছে।তাই রমজান মাসে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার থেকে বিরত থাকতে হয়। সারাদিন যেহেতু না খেয়ে থাকতে হয় তাই কিছু বিষয়ে সচেতন থাকা জরুরী আমাদের।
কারণ শরীর সুস্থ থাকলেই আপনি রোজার জন্য তৈরি হতে পারবেন।আপনাকে অন্যান্য দিনের তুলনায় রোযার মাসে প্রত্যেকদিন সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত না খেয়ে স্রষ্টার সন্তষ্টির জন্য রোজা পালন করতে হয় এবং রাত্রীতে তারাবি নামায আদায় করতে হয়। আপনি রোজার মাসে কিছু স্বাস্থ্য টিপস মেনে চললে স্বাস্থ্য বিষয়ক সর্বোত্তম ফলাফল পেতে পারেন। রমজান মাসে আপনার স্বাস্থ্য যদি ঠিক না থাকে তবে আপনি সঠিকভাবে ইবাদত করতে পারবেন না। দৈনিক সিংড়া বার্তাকে তিনি আরও জানান যে রমজান মাসে আমাদের যে স্বাস্থ্য টিপস গুলো মেনে চলতে হবে সেগুলো নিচে দেওয়া হলো এবং আমার সকলেই সর্ম্পূণ না পারলেও কিছু কিছু নিয়ম কানন গুলো মেনে চলবো তাহলে অন্তত রমজান মাসে সঠিকভাবে ইবাদত করতে পারা যাবে। ১) খেজুর দিয়ে ইফতার শুরু করুন, যা আপনাকে তাৎক্ষণিক শক্তি যোগাবে। পর্যাপ্ত পানি পানে নিজেকে রিহাইড্রেট করুন। ২) ইফতারের সময় আইসোটনিক ড্রিংক অথবা ন্যাচারাল জুস ড্রিংক হচ্ছে মিনারেল, সল্ট ও ভিটামিনের ভালো উৎস। ৩) যত দ্রুত সম্ভব বেশি ভোজনের তাড়না প্রতিরোধ করুন। গবেষণায় পাওয়া গেছে যে, এমনকি খাবার সম্পর্কিত শব্দগুলোও ক্ষুধা বাড়িয়ে তোলে। রোজা ও সংযম শেষে এই প্রবৃত্তি প্রতিহত করুন, পরিমিত পরিমাণে খাওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করুন। ৪) উচ্চ চর্বি ও উচ্চ শর্করা সমৃদ্ধ খাবার এবং অত্যধিক প্রক্রিয়াজাত খাবার বর্জন করুন, যেমন- ভাজা খাবার, ঘি, পাকোরা, বিরানি, মিষ্টি, হালুয়া ইত্যাদি। ৫) ইফতার ও সেহরির সময় লবণাক্ত খাবার গ্রহণ করলে আপনার ডিহাইড্রেশন হবে এবং তৃষ্ণা বৃদ্ধি পাবে। ৬) মাগরিবের নামাজের পর ভালো সুষম খাবার খান।
৭) ধীরে রিলিজ হয় এমন কার্বোহাইড্রেট আপনাকে ইবাদাতের রাতে ভালো শক্তি যোগাবে। ডায়েটে ফাইবারের উৎস যোগ করুন, যা দিনের বাকি সময় আপনার অন্ত্রের কার্যক্রম সচল ও অন্ত্রকে সুস্থ রাখবে। ৮) ফাইবার ও প্রোটিন আপনাকে দীর্ঘসময় পেট ভরা অনুভূতি দেবে- যা আপনার ডায়েট পরিকল্পনার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ৯) পর্যাপ্ত হাইড্রেটেড থাকা ও ফাইবারের উৎস ভোজন রমজানে আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে সাহায্য করবে। ১০) সিরিয়ালস, সালাদ, ফল ও শাকসবজি হচ্ছে তৈলাক্ত তরকারি ও ভাজা স্ন্যাকের চমৎকার বিকল্প। ১১) পরিমিত পরিমাণে খান, অত্যধিক ভরা পেট রাতে ইবাদাতে বিঘ্ন ঘটায়। ১২) শুধুমাত্র দাঁতের সুস্থতার জন্য নয়, আপনার সহ-উপাসকদের শ্বাসের দুর্গন্ধ থেকে বাঁচাতেও তারাবীহের পূর্বে দাঁত ব্রাশিং ও ফ্লসিং করুন। অত্যধিক শর্করাযুক্ত স্ন্যাক ও পানীয়ও দাঁতের জন্য ক্ষতিকর। ১৩) ইফতারের পর প্রতি আধঘণ্টা পরপর পানি পানে পর্যাপ্ত হাইড্রেটেড থাকুন। ১৪) ইফতারের পরপরই শারীরিক ব্যায়াম ভালো নয়, কারণ তখন আমাদের রক্তপ্রবাহ আমাদের ডাইজেস্টিভ সিস্টেমের দিকে চালিত হয়। ১৫) ক্যাফেইন সমৃদ্ধ এনার্জি ড্রিংকের ব্যাপারে সতর্ক থাকুন। চা ও কফিতেও চিনি সীমিত করুন। ১৬) রমজানের নিয়মানুবর্তিতা মেনে পবিত্র এ মাসে ধূমপান ছেড়ে দিন। ১৭) সেহরি এড়িয়ে যাবেন না, কারণ এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাত এবং শরীরকে কার্বোহাইড্রেট, ফাইবার, প্রোটিন ও উপকারী ফ্যাট সমৃদ্ধ সুষম ডায়েট দিয়ে পুষ্টি যোগানোর সুযোগ। ১৮) রমজানে পর্যাপ্ত ঘুম যান। ভালোভাবে বিশ্রাম নিলে রমজানের অধিকাংশ সময় উত্তমভাবে কাজে লাগানো যাবে। ১৯) যদি আপনি নিয়মিত কোনো ওষুধ গ্রহণ করেন অথবা যদি আপনার কোনো স্বাস্থ্য দশা থাকে (যেমন- গর্ভবর্তী বা স্তন্যপান করানো), তাহলে রোজার পরিকল্পনার পূর্বে আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। ২০) ইসলাম অসুস্থ লোকদের রোজা না রাখার অনুমতি দিয়েছে।
রোজার ফিকহ সম্পর্কে জানতে এমন ইমামের কাছে যান যিনি এ ব্যাপারে সঠিক জ্ঞান দিতে পারবেন। আশা করি আমরা সবাই এই ২০ টি নিয়ম গুলো পালন করার চেষ্টা করব। এবং সবাই সুস্থ্য থাকি অন্যকে সুস্থ রাখার চেষ্টা করি।প্রয়োজনে ঘরের বাহিরে গেলে মাস্ক পরিধান করি।এবং সবার সু-স্বাস্থ্য কামনা করি। সবাইকে ধন্যবাদ। ধনবাদান্তে: ডাঃ মোঃ আমিনুল ইসলাম সোহেল আর.এম.ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, তাড়াশ, সিরাজগঞ্জ।