২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সরকারি গাড়ি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করেন সমাজসেবার উপপরিচালক

প্রতিনিধি :
শরিফুল ইসলাম রোকন
আপডেট :
নভেম্বর ৫, ২০২০
58
বার খবরটি পড়া হয়েছে
শেয়ার :
| ছবি : 

স্টাফ রির্পোটার \ মেহেরপুর জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোঃ আব্দুল কাদের তার ব্যক্তিগত কাজেই বেশিরভাগ সময় ব্যবহার করছেন সরকারি গাড়ি অথচ সরকারি গাড়ির অপব্যবহার করা ও ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার না করতে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে মন্ত্রণালয়ের। এতে একদিকে যেমন জ্বালানি তেল বেশি যাচ্ছে সরকারি কোষাগার থেকে। তেমনি ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে সমাজকল্যাণ মন্ত্রনালয়ের।

অনুসন্ধান বলছে, চলতি বছরের ১২ মে জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক হিসেবে যোগদান করেন। তার নিজ জেলা পাশের বিভাগ রাজশাহীর পাবনাতে হওয়ায় নিজ বাড়ী ও তার শশুরবাড়ীসহ বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়ান এই কর্মকর্তা। তবে সুকৌশলী এই উপপরিচালককে সরকারি গাড়ী ব্যবহারে তার ব্যাক্তিগত চালক দিয়ে জেলার বাইরে বের হন। তিনি এর আগে পাবনা জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। মেহেরপুরে যোগদানকালে সরকারের পক্ষ তাকে সরকারি কাজে ব্যবহারের জন্য কালো রংয়ের উন্নতমানের একটি গাড়ি দেয়া হয়। নিয়ম রয়েছে সরকারি কাজ ছাড়া জেলার বাইরে গাড়ি নিয়ে যেতে হলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ও সংশ্লিষ্ট কারণ থাকতে হবে। অথচ উপপরিচালক আব্দুল কাদের জেলা এমনকি তার বিভাগের বাইরে পাবনায় জেলায় আসেন।

যা মেহেরপুর জেলা থেকে পাবনার ঈশ্বরদী শহরের দূরত্ব প্রায় ১০০ কিলোমিটার। সেখানে তার নিজ বাড়ী৷ আবার সেখান থেকে মৌবাড়ী তার শশুরবাড়ীসহ বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়ান এই কর্মকর্তা। গাড়ি নং ঢাকা মেট্টো-ঠ ১৩-৩৩৩৮ মাঝেমাঝে ছাড়াও সপ্তাহের প্রতি বৃহস্পতিবার দুপুরের পর মেহেরপুর অফিস থেকে বের হয়ে আবার ফেরেন রোববার সকালে। এসব কারণে সরকারি গাড়ি ব্যবহার করায় জ্বালানী তেল লাগছে বেশি। অন্যদিকে ব্যক্তিগত কাজে গাড়ি ব্যবহার করায় বদনাম ছড়াচ্ছে সমাজসেবা অধিদপ্তর বিভাগের। গাড়ির চালক মিলন বলেন, ‘স্যার আমাকে প্রতি মাসে ৬ হাজার টাকা বেতন দেয়। আমি বৃহস্পতিবার স্যারকে নিয়ে ঈশ্বরদী আসি। আবার রবিবার মেহেরপুর ফিরতে হয়। আজকে (বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়) স্যারকে প্রথমে তার বাসায় নামেন। পরে আবার তার শশুরবাড়ী নিয়ে যেতে হবে।

আপনার উপপরিচালক স্যার পাবনা শহরে গাড়ি নিয়ে কোথায় কোথায় যায় এমন প্রশ্ন করলে চালক মিলন আরো বলেন, স্যার তার নিজ ঈশ্বরদীর বটতলার বাসায় যান। এই এলাকা ও মৌবাড়ী স্যারের শশুরবাড়ীসহ বিভিন্ন এলাকায় ঘুরতে হয় এছাড়াও যেখানে যেতে বলে আমি যাই।তিনি স্বীকার করেন, শান্ত নামের একজন সরকারি গাড়ী চালক আছেন। যিনি দাপ্তরিক কাজে স্যারকে নিয়ে মেহেরপুরের বিভিন্ন জায়গায় যান। কিন্তু জেলার বাইরে হলে কেবল আমাকেই নিয়ে যান স্যার। ঈশ্বরদী এলাকার স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এই অফিসার নিয়মিত বৃহস্পতিবার থেকে রবিবার ও সরকারি ছুটির দিনেও তার বাসার সামনে একটি কালো রংয়ের সরকারি গাড়ী দেখা যায়। নিজ বাড়ী থেকে অন্যান্য এলাকায়ও যেতে দেখি। তবে সরকারি গাড়ি ব্যবহারের ক্ষেত্রে এ ব্যাপারে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থা নেয়া উচিৎ বলেও জানান তাঁরা। জানতে চাইলে মেহেরপুর জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোঃ আব্দুল কাদের কোন মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। সরকারি যেকোন যানবাহন ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহারে সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা রয়েছে জানিয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। যদি ব্যক্তিগত কাজে ওই কর্মকর্তা সরকারি গাড়ির ব্যবহার করেন। তাহলে তার বিষয়ে সমাজকল্যাণ বিভাগ ব্যবস্থা নিবেন। তবে, চাইলেই তার ব্যক্তিগত কাজে সরকারি গাড়ি ব্যবহার করতে পারবেন না।

সর্বশেষ খবর
menu-circlecross-circle linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram