২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সেই খেঁজুরের রস, গুড় আর পাটালির খেজুর বাগান এখন বিলুপ্তির পথে!

প্রতিনিধি :
শরিফুল ইসলাম রোকন
আপডেট :
জুন ১০, ২০২১
49
বার খবরটি পড়া হয়েছে
শেয়ার :
| ছবি : 


জাহিদুর রহমান তারিক, স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ- 'ঠিলে ধুয়ে দে রে বউ গাছ কাটতি যাবো' যশ খেঁজুরের রস আর গুড় ও পাটালি। দেশি খেঁজুরের গুড় পাটালির জন্য বিখ্যাত কালীগঞ্জ উপজেলাসহ ঝিনাইদহ ৬ উপজেলা। বিভিন্ন গ্রামে খেঁজুর রস জ্বালানীর জন্য অসংখ্য কারখানা ছিল। গুড়ের ভাড়ের খাবরা মাটির অনেকে গভীরে। সেই পুরানো ঐতিহ্য এখন বিলুপ্তের পথে। ছোট ছোট সোনামনিদের কাছে রুপকথা গল্পের মতো।

গ্রামের রাস্তার দুইধারের খেঁজুর গাছ ও অপরিকল্পিত ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা খেঁজর বাগান সৌন্দর্যবর্ধনের পাশাপাশি শীত মৌসুমে অর্থের আয়ের অন্যতম উৎস এই এলাকায়। ধুম পড়ে যায় বাড়ীতে বাড়িতে শীতের পিঠা খাওয়ার মহাউৎসব। নতুন গুড়ের মৌ মৌ গন্ধে বাড়ির আঙিনায় মধুময় করে তোলো। বিশিষ্ট গাছ প্রেমিক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন খেঁজর বাগান একটি লাভজনক চাষ। গ্রাম এলাকার দুইধারে, পরিত্যক্ত জমিতে কিংবা পরিকল্পিত উপায়ে প্রতি বিঘা জমিতে ৫ ফুট বাই ৫ ফুট চারা রোপন করার মাধ্যমে ৩ বছরের মাথায় গিয়ে একজন খেঁজুর বাগান চাষী তাঁর প্রতিবিঘা জমি হতে প্রায় ৫০/৬০ হাজার টাকা গুড় বিক্রয় করে আয় করতে পারে।

এছাড়াও জ্বালানী হিসেবে খেঁজুর পাতা বাশের পাতা, আখের পাতা ব্যবহার করা হয়। বছরে ওই খেঁজুর বাগান হতে একজন বাগান মালিক খেঁজুর বিক্রয় করেও টাকা উপার্জন করতে পারবে। দেশি খেঁজুর স্ব স্ব এলাকা হতে গাছ হতে পাকা খেঁজুর খাওয়ার পর বীজ ছিটিয়ে দিলে চারা গজিয়ে থাকে। ১ মাসের মাথায় সেই চারা পরিকল্পিত উপায়ে লাগানো সম্ভব। এছাড়াও সৌদি খেঁজুর ও আমাদের এলাকায় বাণিজ্যেক ভিত্তিক চাষ হচ্ছে। সুয়াদী গ্রামের খেঁরুর বাগান চাষী মিজানুর রহমান বলেন খেঁজুর চাষ একটি লাভজনক চাষ। উৎপাদন খরচ অনেক কম। তিনি জানান সেই খেঁকুরের হারানো অতীত ফিরে পেতে বনবিভাগের কর্মকর্তা কর্মচারীদের মাঠ পর্যায়ে সক্রিয় হতে হবে। ঝিনাইদহ জেলার গুড় দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে বিক্রি করে ব্যবসায়িরা। বিশেষ করে গুড় পাটালির বড় হাট কালীগঞ্জ নিমতলা বাজারে। এখানে দেশের বিভিন্ন স্থানের পাইকারি ব্যবসায়িরা এস ট্রাক লোড দিয়ে গুড় ও পাটালি নিয়ে যায়।

আবার কোটচাঁদপুর এলাকায় গুড় অনেক বেশি পাওয়া যায়। বিশেষ করে খেজুর বাগান মালিকরা অভাবের তাড়নায় তারা খেজুর গাছগুলো বিক্রি করে। গাছ গুলি বেশি বিক্রি শীত মৌসুমে, এ গাছ সব ইট ভাটায় জালানির কাজে ব্যবহার করা হয়। কৃষিবিভাগ ও বনবিভাগ কে যৌথ কর্মপরিকল্পনার মাধ্যমে মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের সাথে সক্রিয় সচেতনতা সৃষ্টি করে লাভজনক এই খেঁজুর বাগান চাষের বিস্তৃতি ঘটিয়ে আবারো সেই ঐতিহ্যবাহী পুরান ঐতিহ্য গুড়ের হারানো যশ ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে বলে মন্তব্য করেন। গ্রামে গ্রামে চাষীদের শলাপরামর্শের মাধ্যমে অনুপ্রেরনা সৃস্টির মাধ্যমে লাভ জনক খেঁজুর চাষের মাধ্যমে দেশে চাহিদা মিটিয়ে বৈদিশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব।

গুড় ব্যবসায়ী এজাজ আহমেদ বলেন কৃষি অফিসের কর্মকর্তাদের মাঠ পর্যায়ে সচেতনা আর তদারকির অভাব ও অবহেলা আর চাষীদের সাথে সমন্বয় না থাকায় লাভজনক চাষ খেঁজুর বাগান আজ বিলুপ্তের পথে এগিয়ে চলেছে। তবে এখনো যদি গ্রামের উৎসাহী খেঁজুর বাগান চাষীদের কৃষি অফিস থেকে সহযোগিতার করা হয় তাহলে আবারে এই খেঁজুর বাগান চাষীরা নতুন ভাবে ঘুরে দাড়াবেন।

সর্বশেষ খবর
menu-circlecross-circle linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram