২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ঝিনাইদহে বাড়ছে অসম প্রেম ও বাল্য বিয়ে

প্রতিনিধি :
শরিফুল ইসলাম রোকন
আপডেট :
জুলাই ১১, ২০২১
24
বার খবরটি পড়া হয়েছে
শেয়ার :
| ছবি : 


স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ- দিন মজুরের মেয়ে সাথী মনির মাত্র ১৩ বছর বয়সে বসতে হয় বিয়ের পীড়িতে। বয়স কম হওয়ায় বিয়ে হয় কালীগঞ্জ শহরে। অষ্টম শ্রেনীর ছাত্রী সাথী মনির বিয়ের পর দাম্পত্য কলহ শুরু হয়। এখন আর সাথী মনি স্বামীর কাছে যেতে চায় না। সাথী মনির পিতা জানান, দীর্ঘ সময় ধরে স্কুল বন্ধ। পাড়ার উঠতি বয়সের ছেলেরা ঝামেলা করে। মেয়েও ঠিক মতো পড়তে চায় না। তাই বাধ্য হয়ে মেয়ে বিয়ে দিতে হয়।

এখন সে আর স্বামীর কাছে যেতে চায় না। একই ভাবে গোবিন্দুপর গ্রামের রমেচা খাতুন (আসল নাম নয়) কে মাত্র সাড়ে ১৩ বছর বয়সে বসতে হয় বিয়ের পীড়িতে। বিয়ের দিন ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বংকিরা পুলিশ ফাড়ির সদস্যরা বর পক্ষকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। বিয়ে না করার শর্তে থানায় উভয় পক্ষ মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পায়। গোপনে তারা সেই মেয়েকেই আবার বিয়ে করে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় সাথী মনি ও রমেচা খাতুনের মতো কিশোরীদের এখন ঠাঁই হচ্ছে স্বামীর ঘরে। যে বয়সে স্কুলের উদার মাঠে হৈ হুল্লোড় আর পড়ালেখা করে সময় কাটানোর কথা সেই বয়সে “সংসার” নামে এক অজানা পরিবেশে নিজেকে খাপ খাওয়াতে গিয়ে নিজেদের জীবন বিপন্ন করছে।

এমন এক কিশোরী হচ্ছে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার গান্না মাঝেরপাড়া গ্রামের ইয়াসমিন। নিজ গ্রামের একই বয়সী ছেলে আশিকুল ইসলামের সঙ্গে প্রেম করে বিয়ে করে ইয়াসমিন। বিয়ে মানতে নারাজ ছেলের পিতা জাহিদুল ইসলাম। প্রেমের বিয়ে মেনে নিতে না পারায় হতাশায়গ্রস্থ ইয়াসমিন বিষপানে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। সদরের গোবিন্দপুর ও হরিণাকুন্ডুর দারিয়াপুর গ্রামে অপ্রাপ্ত বয়সি ছাত্র ছাত্রীরা প্রেমের সম্পর্ক করে বাড়ি ছাড়া হয়। বয়স না হওয়ায় স্থানীয় চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে তারা বাড়ি ফিরে আসে।

হরিণাকুন্ডুর ভাতুড়িয়া গ্রামের কলেজ পড়–য়া যুবকের সঙ্গে একই এলাকার দশম শ্রেনীর ছাত্রী পালিয়ে ঘর বেধেছে। মেয়ের বয়স কম হওয়ায় তাদের বিয়ে রেজিষ্ট্রি হয়নি। মেয়ের পক্ষ এখনো বিয়ে মানিতে পারিনি। সদর উপজেলার সুরাট গ্রামের এক ভ্যান চালকের প্রেমে পড়ে কোটচাঁদপুরের এক স্কুল ছাত্রী ঘর ছাড়ে। একই ভাবে সাতক্ষিরা শহরের এক স্কুল ছাত্রী পালিয়ে এসে মিয়াকুন্ডু গ্রামে এসে ওঠে। এ ভাবে জেলার প্রায় প্রতিটি গ্রামে অসম প্রেম আর বাল্য বিয়ের হিড়িক পড়েছে। করোনাকালে অলস জীবন, মোবাইল ও ইন্টারনেট সুবিধার কারণে টিনএজারদের বিপথগামী করছে বলে অনেকে মনে করেন।

সর্বশেষ খবর
menu-circlecross-circle linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram