রক্তের গ্রুপ নির্ণয়ে বিপত্তিঃ আলমডাঙ্গার কণা নার্সিং হোমে সিজার অপারেশনের পর প্রসূতি মৃত্যু শয্যায়
স্টাফ রিপোর্টারঃ আলমডাঙ্গার কণা নার্সিং হোমে সিজার অপারেশন করাতে এসে নিমতলা গ্রামের গৃহবধু সাবিনার অবস্থা এখন সঙ্কটাপন্ন। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বেডে শুয়ে এখন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন। ও পজিটিভ রক্তের পরিবর্তে বি পজিটিভ রক্ত রোগির শরীরে পুশ করায় এ বিপত্তি ঘটেছে বলে রোগির আত্মীয়রা অভিযোগ করেছেন। রক্তের গ্রুপ পরীক্ষার ক্ষেত্রে মিস ম্যাক্সিং হয়ে এ বিপত্তি ঘটেছে বলে তাদের দাবি।
রোগির পরিবারসূত্রে জানা যায়, আলমডাঙ্গা উপজেলার নিমতলা গ্রামের রকিবুল ইসলামের স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিনের প্রসব বেদনা উঠলে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি তাকে আলমডাঙ্গার কণা নার্সিং হোমে ভর্তি করা হয়। কণা নার্সিং হোমের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে সিজার করার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেন। রোগির রক্তের গ্রুপ নির্ণয় করে রোগির আত্মীয় স্বজনকে জানিয়ে দেন যে অপারেশনের সময় রক্তের প্রয়োজন হবে। আপনারা বি পজিটিভ রক্ত জোগাড় করেন। সে সময় রোগির ভাগ্নে ইকবাল হোসেন নিজের শরীরের বি পজিটিভ রক্ত প্রদান করেন।
অপারেশনের পর রোগির দেহে বি পজিটিভ গ্রুপের রক্ত দেওয়ার পর ঘটে বিপত্তি। অপারেশনের কাটা স্থান থেকে রক্ত বন্ধ হয়নি। অবিরত রক্ত ঝরতে থাকে। ফলে ক্রমেই রোগির অবস্থা খারাপ হতে থাকে। সকালে কণা নার্সিং হোম কর্তৃপক্ষ মাইক্রোবাস নিয়ে গিয়ে রোগিকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। কণা নার্সিং হোমের মালিক কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধায়ক। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসকরা পুনরায় রোগির রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা করে দেখন বি পজিটিভ না, রোগির রক্তের গ্রুপ আসলে ও পজিটিভ। ইতোমধ্যে ভুল রক্ত দেওয়ার ফলে রোগির লিভার ও কিডনি আক্রান্ত হয়েছে আশঙ্কা করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। ওই দিনই রোগিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে রোগির অবস্থা আশঙ্কাজনক। বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা চলছে। রোগির কিডনি ও লিভার মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে গেছে বলে চিকিৎসকরা অভিমত ব্যক্ত করেছেন বলে জানানো হয়েছে।
রোগির রক্ত দানকারী রামনগর গ্রামের ইকবাল হোসেন জানান, “রোগি আমার খালা। কণা নার্সিং হোমের মালিক ডাক্তার নুরুন- নাহার বেগম আমাদেরকে বলেন, অপারেশনের সময় রক্ত লাগবে। বি পজিটিভ। আমার নিজের রক্তের গ্রুপ বি পজিটিভ। আমার দেওয়া রক্ত খালা দেহে পুশ করার পরই তার অবস্থা খারাপ হতে থাকে। তাছাড়া কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক জানিয়েছিলেন যে, রক্তের গ্রুপ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে মিস ম্যাক্সিং হয়েছে।“