যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে অকথ্য নির্যাতনের মামলায় পাইকপাড়ার হাসান গ্রেফতার
বছর দুয়েক আগে আলমডাঙ্গা উপজেলার ঘোলদাড়ি পাইকপাড়া গ্রামের আজিজুল হকের ছেলে হাসান আলী চুয়াডাঙ্গার ভুল্টিয়া নবিনগরের জাহাঙ্গীর আলমের মেয়ে মুসফিকা মেঘলা দীপ্তিকে বিয়ে করেন। বিয়ের সময় মেয়েকে সাধ্যানুযায়ী স্বর্ণালংকারে সাজিয়ে শ্বশুরালয়ে পাঠানো হয়েছিল।অল্প শিক্ষিত ও বেকার হাসান আলী সুশ্রী দীপ্তিকে বিয়ে করেই সন্তষ্ট হয়নি।
বিয়ের অব্যবহিত পরেই বের হয়ে আসে হাসান আলীর লোভী চেহারা। তার চাহিদানুযায়ি শ্বশুর আজিজুল হককে যৌতুক হিসেবে দিতে হয় ডিসকভার ১২৫ সিসি মোটরসাইকেল ও ঘরের আসবাবপত্র। খুব কষ্টেসাধ্যে, ধার দেনা করে জামাইকে খুশি করতে মোটরসাইকেল কিনে দেওয়া হলেও জামাইকে বেশিদিন খুশি রাখা সম্ভব হয়নি। বেকার জামাই হাসান আলী এবার ঔষধের দোকান দেবেন। সে বাবদ দাবী করা হয় ৫ লাখ টাকা যৌতুক। এ যৌতুকের টাকা না পাওয়া অবধি স্ত্রীর উপর নেমে আসে অকথ্য নির্যাতন।
এ সীমাহীন নির্যাতন থেকে মেয়েকে বাঁচাতে আবারও জামাইকে নগদ ৪০ হাজার টাকা দেন ও একটি শিশুদের অক্সিজেন দেওয়ার মেশিন কিনে দেন শ্বশুর জাহাঙ্গীর আলম। এনজিও থেকে লোন নিয়ে ও বাড়ির গরু-ছাগল বিক্রি করে সেই টাকা জামাইয়ের হাতে তুলে দেন। এ যৌতুক পেয়ে আবারও কিছুদিন গৃহবধূ দীপ্তির সাথে ভালো আচরণ করেন। কিন্তু আপাত এ ভালো আচরণ বেশিদিন দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। পুনরায় যৌতুকের জন্য শুরু হয় যথারীতি নির্যাতন। এবার যৌতুকের চাহিদার পরিমাণ বেশ মোটা অংকের। ২ বিঘা জমি বিক্রি করে ৮ লাখ টাকা দিতে হবে। স্বাভাবিকভাবেই যৌতুকের এ বিরাট চাহিদা পূরণে অক্ষমতা প্রকাশ করেন গৃহবুধু দীপ্তির পিতা।
এতে গৃহবধুর উপর বাড়তে থাকে নির্যাতনের মাত্রা। স্বামী প্রবরের এ নির্যাতনে সমর্থন যোগান স্বামীর বাপ-মা। এতে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেন হাসান আলী। গত ৪ মার্চ যৌতুকের দাবিতে তিনি স্ত্রীকে অমানসিকভাবে পিটিয়ে রক্তাক্ত করে ১ বছরের শিশুসন্তানসহ বাড়ি থেকে বের করে দেন। এ সংবাদ জানতে পেরে অকথ্য নির্যাতনের শিকার গৃহবধুকে তার বাপ নিয়ে গিয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।
হাসপাতালে চিকিৎসার পর কিছুটা সুস্থ হওয়ার পর ৫ মার্চ বাপের সাথে আলমডাঙ্গা থানায় উপস্থিত হয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন নির্যাতনের শিকার মুসফিকা মেঘলা দীপ্তি। এ অভিযোগের সত্যতা অবগত হয়ে পুলিশ আটক করেছে অভিযুক্ত স্বামী হাসান আলীকে।