২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

ভরা মৌসুমেও পানি নেই, পাট নিয়ে বিপাকে আলমডাঙ্গার কৃষকরা

প্রতিনিধি :
শরিফুল ইসলাম রোকন
আপডেট :
আগস্ট ১১, ২০২১
21
বার খবরটি পড়া হয়েছে
শেয়ার :
| ছবি : 


রহমান মুকুলঃ চলছে শ্রাবণ মাসের শেষ ভাগ। ভরা মৌসুমেও আলমডাঙ্গা উপজেলার পৌণে ৩শ গ্রামে চলছে পানির জন্য হাহাকার। পাটচাষিরা জাগ দিতে পারছেন না তাদের সোনালী স্বপ্ন পাট। আমন ধান চাষেরও পর্যাপ্ত পানি নেই।
উপজেলার পাঁচলিয়ার কৈমারি বিল। এ বিলে এক সময় আষাঢ় মাস আসার সাথে সাথে পানি থৈ থৈ অবস্থা হতো। অথচ, এখন ভরায়ও এ বিলে পানির অভাবে আমন ধান রোপণ করতে পারছেন না কৃষকরা। শুধু এ কৈমারি বিল না, মনদহ, সালসুলা, শিতাপিতা, নটা, চ্যাংমারি, গজাড়িয়া বিলসহ উপজেলার প্রায় বিশটি বিলের একই পরিণাম। পানিশূন্য। কৃষকরা কোথায় পাট জাগ দেবেন?

ফারাক্কার অভিশাপে উপজেলার কুমার নদ, ভাটুই নদীসহ হাফ ডজন নদী শুকিয়ে গেছে। শুধুমাত্র নিবু নিবু প্রদীপ শিখার মত ক্ষিণপ্রাণে কুলকুলু বয়ে চলেছে মাথাভাঙ্গা নদী। ফলে এ সকল নদ-নদী থেকে উৎপন্ন উপজেলার প্রায় সকল খাল-বিল অস্তিত্ব হারিয়েছে। অনেক খালবিল দখল করে ভরাট করে নেওয়া হয়েছে।" কোন মতে আছে প্রাণ ধরিয়া" এমন কিছু বিল টিকে থাকলেও তাতে পানি নেই। মাছ চাষের পুকুর ছাড়া কোথাও পানি নেই। ফলে কৃষরা পাট জাগ দিতে পারছেন না পানির অভাবে।

এলাকার পাটচাষিরা পড়েছেন যারপরনাই বিপাকে। পাট জাগ দেবার মতো মিলছে না কোথাও পর্যাপ্ত পানি। কোনো উপায় না পেয়ে কৃষকরা পাট কেটে নিজেদের খানাখন্দে ফেলছেন। শুকনো খানাখন্দ শ্যালো মেশিন দিয়ে পানি ভরে সেখানে জাগ দিচ্ছেন।

অনেক কৃষকের সে ব্যবস্থাও নাই। তারা অন্যের খানাখন্দ বা ছোট অব্যবহৃত মজা পুকুর লীজ নিয়ে তাতে শ্যালো মেশিনে পানি দিয়ে পাট জাগ দিচ্ছেন। ফলে পাট চাষের খরচ অনেক বেড়ে যাচ্ছে।

তাছাড়া, ফলন ভালো হলেও এভাবে স্রোতহীন অপর্যাপ্ত পানিতে পাট জাগ দেওয়ায় পাটের আঁশ আর সোনালি রঙের হচ্ছে না। কালো রঙের ফ্যাকাসে হয়ে যাচ্ছে। কালো পাটের বাজারমূল্য সোনালী আঁশের থেকে অনেক কম হওয়ায় ভালো দাম থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন কৃষকরা।

এ বিষয়ে উপজেলার পাঁচলিয়া গ্রামের কৃষক আব্দুর রহিম জানান, খালবিলে পানি না থাকার কারণে সড়কের পাশের খাদে জমা বদ্ধ পানিতে পাট জাগ দিয়েছি। তাতে পাটের আঁশ কালো ও ও দেখতে খারাপ হচ্ছে। কালো রঙের অনাকর্ষণীয় পাট বাজারে কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।

ডামোশ গ্রামের কৃষক জুয়েল রানা বলেন, পাটের ফলন এবার ভালো হলেও প্রয়োজনীয় পানির অভাবে দুশ্চিন্তায় আছেন তারা। জিকে প্রজেক্টের মেইন ক্যানেলে পানি থাকলেও অজানা কারণে সংযোগ খালে বা শাখা খালে পানি দেওয়া হচ্ছে না। বিভিন্ন গ্রাম ও মাঠে মাঠে অবস্থিত শাখা ক্যানেলে পানি থাকলে সেখানে অবলীলায় পাট জাগ দিতে পারতেন কৃষকরা।

আলমডাঙ্গা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ সোহেল রানা জানান, এ বছর উপজেলায় পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮৩৫০ হেক্টর। গত ২ বছর ধরে পাটের মূল্য ভালো পাওয়ায় কৃষকরা পাট চাষের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। ফলনও ভালো হয়েছে। তবে কৃষকরা পাট জাগ দেওয়া নিয়ে কিছুটা সমস্যায় পড়েছেন।

সর্বশেষ খবর
menu-circlecross-circle linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram