২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

ফাতেমা ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত প্রসূতিকে দিল ক্ষতিপূরণ

প্রতিনিধি :
শরিফুল ইসলাম রোকন
আপডেট :
মার্চ ৫, ২০২১
35
বার খবরটি পড়া হয়েছে
শেয়ার :
| ছবি : 


আলমডাঙ্গার ফাতেমা ক্লিনিকে চিকিৎসা নিতে গিয়ে নওদা বন্ডবিলের রেশমা খাতুন নামের এক গৃহবধূর করুণ দশা নিয়ে দৈনিক মাথাভাঙ্গা পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলে বেকায়দায় পড়ে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ। আলমডাঙ্গা থানা পুলিশের পক্ষ থেকেও এই স্পর্শকাতর বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ খবর রাখা শুরু হয়েছে বলে জানা যায়। অন্যদিকে, সংবাদ প্রকাশের পর সন্ধ্যায় অসহায় রোগিকে নিয়ে এলাকার মানুষ ফাতেমা ক্লিনিকে চড়াও হয় ক্ষতিপূরণের দাবিতে।


জানা যায়, আলমডাঙ্গার নওদা বন্ডবিল গ্রামের দরিদ্র ভ্যানচালক নূর ইসলামের স্ত্রী রেশমা খাতুনের প্রসব বেদনা উঠলে তাকে গত ১০ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার শহরের ফাতেমা ক্লিনিকে নিয়ে ভর্তি করা হয়। সে সময় আল্ট্রাসনোগ্রাম করে জানানো হয় যে প্রসূতিকে দ্রæত সিজার অপারেশন করতে হবে। কিন্তু ৪ দিন ভর্তি করে রেখেও সিজার করা হয়নি। প্রচন্ড ব্যাথায় চেঁচামেচি করলে প্রসূতিকে চিকিৎসা দিয়েছেন ডিএমএফ রুবেল হোসেন। এক পর্যায়ে অসহ্য যন্ত্রণায় প্রসূতি প্রাণে বাঁতে পালিয়ে শহরের শেফা ক্লিনিক নামে আরেকটি ক্লিনিকে গিয়ে উপস্থিত হন।

সেখানে আবার তাকে আলট্রাসনোগ্রাম করা হয়। আল্ট্রাসনোগ্রাম করে দেখতে পান যে প্রসূতির পেটের সন্তান মারা গেছে। পরে প্রসূতি আবার ফাতেমা ক্লিনিকে ফিরে গেলে ফাতেমা ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ চুয়াডাঙ্গা থেকে বড় ডাক্তার নিয়ে এসে অপারেশন করানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভর্তি করে নেয়। কিন্তু পুরো একদিন অতিবাহিত হলেও সিজার করা হয়নি। বরং শেফা ক্লিনিকের আল্ট্রাসনোগ্রাম রিপোর্টসহ চিকিৎসা সংক্রান্ত সকল ডকুমেন্টস আটকে রেখে প্রসূতিকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। পরে আবার প্রসূতি শেফা ক্লিনিকে গিয়ে জীবন বাঁচানোর অনুরোধ করেন। এক পর্যায়ে সেখানে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে মৃত শিশু প্রসব করানো হয়।


সিজার অপারেশনের পরে হতদরিদ্র ভ্যানচালকের স্ত্রী রেশমার শারীরিক অবস্থা মোটেও ভালো হয়নি। ক্রমেই খারাপ হতে থাকে। পেটের ভেতর ৩/৪ দিন ধরে মৃত শিশু থেকে যাওয়ায় অবস্থা খুবই খারাপ পর্যায়ে চলে গেছে। অপারেশন স্থলে ইনফেকশন মারাত্মক রূপ ধারণ করেছে। প্রতিদিন শেফা ক্লিনিকে গিয়ে ড্রেসিং করিয়ে নিতে হচ্ছে।


শেফা ক্লিনিকের চিকিৎসক ডাক্তার আবু সালেহ মোহাম্মদ ইমরান জানান, প্রসুতির পেটে শিশু মরে পঁচে গিয়েছিল। এখন ইনফেকশন আছে। তাছাড়া বøাড দেওয়া লাগছে।


ফাতেমা ক্লিনিকের মালিক হারদী স্বাস্থ কমপ্লেক্সের এক্স-রে টেকনোলজিস্ট মঞ্জুর আলী বলেন, আগেই তো এ বিষয়টা ম্যানেজ করা হয়েছে। এখন আবার নতুন করে কি হচ্ছে? রোগির প্রেশার ছিল বেশি।
এদিকে, এ সংক্রান্ত সংবাদ দৈনিক মাথাভাঙ্গা পত্রিকায় প্রকাশিত হলে অস্বস্তিতে পড়েছেন ফাতেমা ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ। সংবাদটি প্রকাশিত হওয়ার পর আলমডাঙ্গা থানা পুলিশের পক্ষ থেকেও এই স্পর্শকাতর বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ খবর রাখা শুরু হয়েছে বলে জানা যায়। আলমডাঙ্গা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাসুদুর রহমান জানান, সংবাদপত্রে এ সংক্রান্ত সংবাদ পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত রোগির পরিবারের সাথে কথা বলেছি।


বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ক্ষতিগ্রস্ত রোগিকে ভ্যানে করে ফাতেমা ক্লিনিকের সামনে নিয়ে চড়াও হয় এলাকাবাসি। ৭ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আশরাফুল আলম বাবু জানান, ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ শেষ পর্যন্ত ২০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দিয়েছেন।


এদিকে, পর পর দুটি অপচিকিতসার অভিযোগ উঠায় আলমডাঙ্গার ফাতেমা ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ বেশ বিপাকে পড়েছে। প্রশাসনসহ বিভিন্ন জায়গায় লাফঝাঁপ শুরু করেছে। সন্ধ্যার পর থেকে ফাতেমা ক্লিনিকের সামনে পুলিশকে পাহারা দিতে দেখা গেছে।

সর্বশেষ খবর
menu-circlecross-circle linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram