২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পেটের যন্ত্রনা সইতে না পেরে হাসপাতালের বাথরুমে নারী রোগীর আত্মহত্যা

প্রতিনিধি :
শরিফুল ইসলাম রোকন
আপডেট :
সেপ্টেম্বর ১১, ২০২১
30
বার খবরটি পড়া হয়েছে
শেয়ার :
| ছবি : 

পেটের যন্ত্রনা সইতে না পেরে আলমডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বাথরুমে মধ্যবয়সী নারী রোগী মালেকা খাতুন আত্মহত্যা করেছে । নিজের উড়না বাথরুমের জানালার গ্রিলের সাথে পেচিয়ে ওই নারী রোগী আত্মহত্যা করেছে। গত ১০ সেপ্টেম্বর রাত পৌনে ১২টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বাথরুম থেকে নাশ উদ্ধার করা হয়।

জানাগেছে, উপজেলার হারদী কুয়াতলা গ্রামের গোলাম রসুলের স্ত্রী মালেকা খাতুন(৬০) দীর্ঘদিন ধরে নানা রোগের কারণে অসুস্থ ছিলেন। কয়েক বছরধরে বিভিন্ন ডাক্তার ও হাসপাতালে নিয়েও তাকে সুস্থ করতে পারিনি। মালেকা খাতুনের দুই ছেলে। গত ৮ সেপ্টেম্বর পেটে জ¦ালা যন্ত্রনা নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হারদী ভর্তি হন। ছেলে বেটাবৌ সাতে না আসায় মালেকা খাতুনের স্বামীই তার সাথে থাকতো। মালেকা খাতুনের প্রসাব পায়খানা বন্ধ হয়ে যায়। ১০ সেপ্টেম্বর বিকাল থেকে তার পেটের যন্ত্রনা বেড়ে গেলে তার শরীলে স্যালাইন দেওয়া হয়।

মালেকা খাতুনের স্বামী গোলাম রসুল তার সাথেই ছিল। রাত ১১টার দিতে তার স্যালাইন শেষ যায়। নার্স রুমে মালেকাকে তার স্বামী নিয়ে গিয়ে স্যালাইন খুলে তাকে বেডে নিয়ে আসে। মহিলা ওয়ার্ডে পুরুষ মানুষ থাকা নিষেধের কারণে গোলাম রসূল স্ত্রীকে বেডে রেখে হাসপাতালের নিচে যায়। প্রায় পৌনে ১২টার দিকে ওই ওয়ার্ডের একটি রোগী বাথরুমে গিয়ে দেখতে পায় মালেকা খাতুন তার উড়না গ্রিলের সাথে পেচিয়ে আত্মহত্যা করেছে। তার লাশ ঝুলতে দেখে চিৎকার করে ওই মহিলা জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। পরে অন্যাণ্য রোগীর চেঁচামেচিতে গোলাম রসূল উপড়ে গিয়ে দেখতে পায় তার স্ত্রী আত্মহত্যা করেছে। এসময় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মালেকা খাতুনের লাশ উদ্ধার করে বাইরে নিয়ে আসে। পরে হাসপাতালের কর্তব্যরত ডাক্তার আলমডাঙ্গা থানা পুলিশকে সংবাদ প্রদান করেন। সকালে আলমডাঙ্গা থানায় একটি অপমৃত্যু দায়ের করা হয়। পরে সুরতাহাল রিপোর্ট শেষে লাশ দাফনের অনুমতি পেয়ে বেলা ২টার সময় দাফন কাজ সম্পন্ন করা হয়।

হাসপাতালের ডিউটি মেডিকেল অফিসার ডাক্তার মাসুদ রহমান বলেন, ৮ তারিখে পেটে ইনফেকশন ও মানসিক অস্তিরতা নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয় মালেকা খাতুন। গত দুদিনধরে তার চিকিৎসা চলছিল। শুক্রবার রাতে পৌনে ১২টার সময় জানতে পারি মালেকা খাতুন বাথরুমে নিজের উড়না গ্রিলে পেচিয়ে আত্মহত্যা করেছে। তার সাথে তার পরিবারের কোন লোক থাকতো না।

এদিকে মালেকা খাতুনের স্বামী অভিযোগ করে বলেন, আমার স্ত্রীর বিকাল থেকে পেটের যন্ত্রনা বেশি হয়। ডাক্তার ও নার্সদের জানালে তারা স্যালাইন পুশ করে দেয়। তবুও তার জ¦ালা যন্ত্রনা কমেনি। রাত ১১ টার দিকে তার স্যালাইন শেষ হলে তা খোলার জন্য আমি ৩বার নার্সদের ডাকতে গেছি। একবারও আসেনি। পরে আমি নিজে বেড থেকে আমার স্ত্রীকে তোলে নিয়ে নার্সদের রুমে নিয়ে স্যালাইন খুলে নিয়ে যায়। মহিলা ওয়ার্ডে পুরুষ থাকা নিষেধ। তাই আমার স্ত্রীকে বেডে রেখে আমি নিচে আসি। রাত পৌনে ১২টার দিকে জানতে পারি মহিলা ওয়ার্ডে একজন বাথ রুমে গিয়ে আত্মহত্যা করেছে। দৌড়ে গিয়ে দেখতে পায় আমার স্ত্রী মালেকা খাতুন।

আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ আলমগীর কবীর জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বাথরুমে নারী রোগীর আত্মহত্যার ঘটনা জানার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। সকালে পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেছে। পরিবারের লোকজনের কোন অভিযোগ না থাকায় সুরতাহাল রিপোর্ট শেষে লাশ দাফনের জন্য হস্তাস্তর করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর
menu-circlecross-circle linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram