১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পাক বাহিনীর বিমান হামলায় ঝিনাইদহে নিহত মুক্তিযোদ্ধা পরিবার ৪৮ বছরেও স্বীকৃতি পায়নি

প্রতিনিধি :
শরিফুল ইসলাম রোকন
আপডেট :
ডিসেম্বর ৩০, ২০২০
26
বার খবরটি পড়া হয়েছে
শেয়ার :
| ছবি : 


স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহঃ মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে গুরুত্বপুর্ন তথ্য প্রদান ও তাদের খাবার সরবরাহ করতেন মকছেদুর রহমান। তার দেওয়া নিখুঁত তথ্য পেয়ে মুক্তিযোদ্ধারা পাকি বাহিনীর বিরুদ্ধে সাফল্য পায়। কিন্তু মকছেদ স্বাধীনতার লাল সবুজ পতাকা দেখে যেতে পারেনি। পাক বাহিনীর বিমান হামলায় স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়েসহ তিনি নির্মমভাবে প্রাণ হারান। স্বাধীনতার ৪৮ বছর পার হয়েছে। অনেক রাজাকার ও অমুক্তিযোদ্ধাদের গায়ে লেগেছে মুক্তিযোদ্ধার তকমা। কিন্তি স্বীকৃতি মেলেনি একসাথে ৫ জন স্বজন হারানো ঝিনাইদহের মুক্তিযোদ্ধার পরিবারটির। স্বজন হারানো আর বোমার স্প্রিন্টারের আঘাত আজও মনে করিয়ে দেন সেদিনের দুঃসহ স্মৃতির কথা।

এখন ভাতা বা সুযোগ সুবিধা নয়, পরিবারটি শুধু চায় সম্মান। সেদিনের ভয়াবহ দিনের কথার বর্ননা করে বারবার বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন ঝিনাইদহ সদর উপজেলার গিলাবাড়ীয়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধার সন্তান চায়না খাতুন। চায়না খাতুন জানান, একাত্তরের ৫ ডিসেম্বর দুপুর বেলা গিলাবাড়ীয়া গ্রামে আমার পিতা মোকছেদুর রহমান ও মা ৩ সন্তান নিয়ে বসে ছিলেন বাড়ীর উঠানে। সে সময় পাকিস্থান বাহিনীর একটি বিমান আমাদের বাড়ি লক্ষ্য করে বোমা মারে। এতে ঘটনাস্থলেই ছিন্ন ভিন্ন হয়ে যায় পিতা মোকছেদুর রহমানের দেহ। রক্তাক্ত নিথর দেহ পড়ে থাকে বাড়ির উঠোনে। আহত হয়ে মারা যান মা স্ত্রী ছকিনা খাতুন, বোন রানু খাতুন এবং দুই ভাই ছেলে তোতা মিয়া ও পাতা মিয়া।

চায়না খাতুন জানান, তিনিও গুরুতর আহত হন। ভাগ্যক্রমে বাড়ীর বাইরে থাকায় করায় বেঁচে আমার ছোট ভাই মিজানুর রহমান। গ্রামবসি জানায়, পরিবারের ৫ সদস্যকে হারিয়ে বোন চায়না খাতুন ও মিজানুর রহমান হয়ে পড়েন অসহায়। সে সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাদের জন্য ২ হাজার টাকা অনুদান দেন। গ্রামবাসীর সহযোগিতায় চলে তাদের সংসার। মুক্তিযোদ্ধাদের তথ্য দেওয়া ও নানা ভাবে সহযোগিতা করার অপরাধে পাক বাহিনী হামলা চালিয়ে একই পরিবারের ৫ সদস্যকে হত্যা করলেও আজো মেলেনি তাদের মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি। মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়ি, ভাতা ও নানা সুযোগ সুবিধা প্রদান করা হলেও বারবার উপেক্ষিত থেকেছে মকছেদের পরিবার। ঝিনাইদহ সদরের সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সিদ্দিক আহম্মেদ জানান, পরিবারটি অসহায় ভাবে জীবন যাপন করছে। অবশ্যই তাদের স্বীকৃতি দেওয়া উচিৎ। ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক সরোজ কুমার নাথ জানান, পরিবারটিতে রাষ্ট্রীয় ভাবে সম্মান প্রদান করা হবে।

সর্বশেষ খবর
menu-circlecross-circle linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram