২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দীর্ঘ ১৭ মাস পর স্কুল কলেজে এসে শিক্ষার্থীরা খুবই খুশি ও উচ্ছ্বসিত

প্রতিনিধি :
শরিফুল ইসলাম রোকন
আপডেট :
সেপ্টেম্বর ১২, ২০২১
34
বার খবরটি পড়া হয়েছে
শেয়ার :
| ছবি : 

শরিফুল ইসলাম রোকন : দীর্ঘ ১৭ মাস পর স্কুল কলেজে এসে আলমডাঙ্গার শিক্ষার্থীরা খুবই খুশি ও উচ্ছ্বসিত। বেলুন-রঙিন কাগজ দিয়ে স্কুল গেট ও ক্লাশ রুম সাজিয়ে, কোথাও কোথাও কেক কেটে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের ফুল দিয়ে বরণ করে নিয়েছে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা। ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে স্বাস্থবিধি মেনে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও কলেজ পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এসেছে শিক্ষার্থীরা। প্রথমদিনে প্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্র-ছাত্রীদের ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে এ সময় শিক্ষা বিভাগ, জেলা প্রশাসন, রাজনৈতিক ব্যক্তিরাসহ বিভিন্ন স্তরের জনপ্রতিনিধিরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো পরিদর্শন করেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান গেটে থার্মোমিটার, মাস্ক, হ্যান্ড ওয়াস ও ফুল হাতে নিয়ে শিক্ষার্থদের বরণ করতে শিক্ষকদের দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।

আলমডাঙ্গা পাইলট বালিকা বিদ্যালয়

আলমডাঙ্গা সরকারি কলেজ, মহিলা ডিগ্রী কলেজ, আলমডাঙ্গা পাইলট সরকারি উচ্চবিদ্যালয়, পাইলট বালিকা বিদ্যালয় ও এরশাদ একাডেমিতে খোজ নিয়ে জানা যায়, প্রথমদিনে পুরোপুরি স্বাস্ব্য বিধি মেনেই শুরু হয়েছে শিক্ষা কার্যক্রম। প্রথম দিনে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ছিল যথেষ্ঠ। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান গেটে থার্মোমিটার, মাস্ক, হ্যান্ড ওয়াস ও ফুল হাতে নিয়ে শিক্ষার্থদের বরণ করতে শিক্ষকদের দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।

আলমডাঙ্গা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুল বারী জানান, আলমডাঙ্গা উপজেলার সকল কলেজ ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আনন্দ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে স্কুলে ফেরাকে স্বাগত জানাতে বেলুনসহ রঙিন কাগজ দিয়ে স্কুল সাজানো এবং শিক্ষার্থীদেরকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন শিক্ষকরা।

তিনি আরও বলেন, দীর্ঘদিন শিক্ষার্থীরা একটি ট্রমার মধ্য দিয়ে গেছেন। এরই মধ্যে এসব শিশুদের দুয়েকজনের হয়তো আপনজনও করোনায় মারা গেছেন কিংবা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ অবস্থায় শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের কথা বিবেচনায় রেখে বিদ্যালয়ের প্রথম দিনটিকে আনন্দঘন করার প্রয়াস পেয়েছি আমরা। আমার বিশ্বাস এর ফলে শিক্ষার্থীরা কলেজ ও স্কুলে লেখাপড়ায় আরো মনযোগী হবে এবং এ দেড় বছরের গ্যাপ পূরণ করতে পারবে। তবে এক্ষেত্রে আমরা শিক্ষার্থীদের জন্য স্বাস্থ্যবিধি মানাকে কড়াকরিভাবে পালনে শিক্ষক ও অভিভাবকদের ব্যাপকভাবে উৎসাহিত করছি।

আলমডাঙ্গা উপজেলা শিক্ষা অফিসার শামসুজ্জোহা বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে গ্রাম ও শহরের শিক্ষা বৈষম্য দূর করাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেওয়া হয়েছে। আমাদের বিদ্যালয়ের শিক্ষকমÐলী নিজ নিজ স্কুলের শিশুদের নিয়ে পৃথক যাচাই-বাছাই করে এ ক্ষতি পূরণের জন্য নিজ নিজ কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করবেন। সে মোতাবেক পৃথক পৃথক ভাবে সমস্যা চিহ্নিত করে এ ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কর্মপরিকল্পনা নিলে এ ক্ষতিপূরণ করা সম্ভব।

আলমডাঙ্গা সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কৃষিবীদ গোলাম সরোয়ার মিঠু বলেন, প্রথমদিনে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মত। কলেজে এসে শিক্ষার্থীরা খুবই খুশি। দীর্ঘদিন বাড়িতে থাকার পর শিক্ষার্থীরাদের পড়াশোনায় বিকাশ ঘটেনি । আমরা যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে কলেজ পরিচালনা করার চেষ্টা চালাচ্ছি ।

হাটবোয়ালিয়া মাধ্যমিক বালিকা বিদালয়ের সভাপতি জিনারুল ইসলাম বিশ^াস বলেন, চোখের সামনে প্রিয় শিক্ষার্থীদের দেখে অনেক আনন্দ হচ্ছে। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাটা আমাদের জন্য এখন বড় চ্যালেঞ্জ। প্রথম দিনে আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার চেষ্টা করেছি। শিক্ষার্থীদের তিন ফুট দূরত্বে বসানো জন্য সকল শিক্ষকদের বলা হয়েছে। তাদের মনকে উৎফুল্ল রাখার জন্য খেলাধুলারও ব্যবস্থা করা হয়েছে। ‘এতদিন স্কুলটিতে ছিল শুধুই শূন্যতা। আবার তাদের বিদ্যালয়ে আসতে দেখে ভাল লাগছে।

এরশাদপুর একাডেমির প্রধান শিক্ষক ফজলুল হক শামীম বলেন, প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্য সুরক্ষার ব্যাপারে সব প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কোনো শিক্ষার্থী যদি অসুস্থবোধ করে তাহলে দ্রæত শিক্ষকদের অবহিত করার জন্য শিক্ষার্থীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

শিক্ষার্থীরা বলেন, দীর্ঘদিন পর স্কুল ও কলেজে এসে আমাদের ভালো লাগছে। অনেক দিন আমাদের প্রিয় সহপাঠীদের সঙ্গে দেখা হয়নি । আজ তাদের সাক্ষাৎ পাওয়ায় মন আনন্দে ভরে গেছে। মনে হচ্ছে এ এক নতুন আনন্দ ও নতুন স্বপ্ন । সপ্তাহের একদিন ক্লাস হলেও আমরা খুশি ও উচ্ছ্বসিত।

সর্বশেষ খবর
menu-circlecross-circle linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram