২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঝিনাইদহের ১৩ কিলোমিটারে বড় বড় গর্তে পড়ে ঘটছে দূর্ঘটনা বাড়ছে মহাভোগান্তি

প্রতিনিধি :
সুজন ইভান
আপডেট :
আগস্ট ৭, ২০২০
29
বার খবরটি পড়া হয়েছে
শেয়ার :
| ছবি : 

স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহঃ ঢাকা-খুলনা জাতীয় মহাসড়ক। এই সড়কের কালীগঞ্জ উপজেলার বারবাজার থেকে ঝিনাইদহ হয়ে শৈলকুপা উপজেলার শেখপাড়া পর্যন্ত দুরত্ব ৮০ কিলোমিটার। এই ৮০ কিলোমিটারের মাঝে দুই এক কিলোমিটার রয়েছে চলাচলের উপযোগি। বাকি রাস্তা বর্তমানে পথচারীদের মহা ভোগান্তির কারন হয়ে দাড়িয়েছে। মহাসড়টির এই অংশে পিচ-পাথর উঠে বড় বড় গর্ত তৈরী হয়েছে। অনেক স্থানে এতো বড় গর্ত তৈরী হয়েছে যে, গর্তে পড়ে প্রায়ই দূর্ঘটনা ঘটছে।

আর এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় মাঝে মধ্যে পিচ রাস্তায় ইটের সলিং করে আপাতত চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ওই সড়কে চলাচলকারী একাধিক যানবাহনের চালকরা বলছেন মাত্র ৪০ মিনিটের পথ এখন ১ঘন্টা ৩০ মিনিটেও যাওয়া যাচ্ছে না। তাছাড়া এই ভাঙ্গাচুরা সড়কে প্রায়ই দূর্ঘটনা ঘটছে। অনেক স্থানেই গাড়ি বিকল হয়ে পড়ে থাকছে। মাঝে মধ্যে নামমাত্র সংষ্কার করা হচ্ছে, যা সপ্তাহ যেতে না যেতেই আবার পূর্বের অবস্থায় ফিরে যাচ্ছে। সড়কটুকুতে কর্তৃপক্ষের সু-নজর নেই।

অবশ্য সংশ্লিষ্ট অফিসের কর্মকর্তারা বলছেন, তারাও সড়কটি নিয়ে বিব্রত। সড়ক ও জনপথ বিভাগে খোজ নিয়ে জানা গেছে, কুষ্টিয়া থেকে যশোর আর ঝিনাইদহ থেকে মাগুরা পর্যন্ত ঝিনাইদহ অংশে প্রায় ৯০ কিলোমিটার মহাসড়ক রয়েছে। এই মহাসড়কের বারবাজার থেকে শেখপাড়া পর্যন্ত বর্তমানে চলাচলের একেবারেই অযোগ্য হয়ে পড়েছে। বেশিরভাগ স্থানে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত তৈরী হয়েছে। সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, ঝিনাইদহ-যশোর মহাসড়কের ঝিনাইদহের হামদহ বাসষ্টান্ডে পর থেকে লাউদিয়া, চুটলিয়া, তেতুলতলা, বিষয়খালী, কয়ারগাছি, ছালাভরা, বেজপাড়া, খয়েরতলা, নিমতলা বাসষ্টান্ড, মেইন বাসষ্টান্ড এলাকায় এবংঝিনাইদহ-শেখপাড়া মহাসড়কের আমতলা, ভাটই, গাড়াগঞ্জ, চড়িয়ারবীল, মদনডাংগা, শেথপাড়া পর্যন্ত বিটুমিন (পিচ) আর পাথর উঠে বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে।

এই সকল স্থানে বর্তমানে এমন অবস্থা বিরাজ করছে যা পথচারীদের চলাচলে ভোগান্তির কারন হয়ে দাড়িয়েছে। সৃষ্ট গর্তের কারণে প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা। সড়ক বিভাগ থেকে মাঝে মধ্যে সংষ্কার করা হলেও সৃষ্টি হওয়া গর্তগুলো ভালো হচ্ছে না। সংষ্কারের এক সপ্তাহের মধ্যেই আবার গর্তের সৃষ্টি হচ্ছে। একাধিক যানচালক জানান, সামান্য বৃষ্টি হলেই সড়কটির পিচ-পাথর উঠে গর্ত তৈরী হয়। আম্পান ঝড়ের সঙ্গে বৃষ্টিতে বেশি ক্ষতি হয়েছিল সড়কের। এরপর কয়েকদফা গর্ত ভরাট করা হয়েছে, কিন্তু ২-৪ দিন পরই আবার পূর্বের অবস্থা সৃষ্টি হচ্ছে। সংষ্কার করা স্থানগুলো সপ্তাহ যেতে না যেতেই আবারো ভেঙ্গে গর্তে পরিনত হচ্ছে। যে কারনে সড়কটি দিয়ে অত্যান্ত ঝুকি নিয়ে তাদের চলাচল করতে হচ্ছে। ওই সড়কে চলাচলকারী বাস চালক জামাল হোসেন জানান, অত্যান্ত ঝুঁকি নিয়ে তাদের চলাচল করতে হচ্ছে। বাসে যাত্রী নিয়ে হেলে-দুলে পথ চলা যায় না। তারপরও উপায়ন্তর না পেয়ে তাদের চলতে হচ্ছে।

তিনি আরো জানান, ভাঙ্গাচুরা রাস্তায় চলাচল করতে গিয়ে গাড়ি ও সময়ের অনেক ক্ষতি হচ্ছে। সড়কে চলাচলকারী যানবাহনগুলো প্রতিনিয়ত বিকল হয়ে পড়ছে। ট্রাক চালক আব্দুল আলিম জানান, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের একমাত্র যোগাযোগ হচ্ছে ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়া-যশোর মহাসড়ক। যশোর বেনাপোল স্থলবন্দর থেকে ঝিনাইদহের উপর দিয়ে উত্তরবঙ্গসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যানবাহন চলাচল করে। মোংলা নৌবন্দর থেকেও মালামাল নিয়ে ট্রাক চালকরা এ জেলার উপর দিয়েই উত্তরবঙ্গে যান। এছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ এই মহাসড়ক দিয়ে ঢাকা, রাজশাহী, ফরিদপুরসহ জাতীয় ও আঞ্চলিক বিভিন্ন রুটের যাত্রীবাহী বাসসহ পণ্যবাহী যানবাহন চলাচল করে থাকে। কিন্তু সড়কটির বেশির ভাগ আংশ ভেঙ্গেচুের যাওয়ায় অতিরিক্ত সময়ের পাশাপাশি তাদের ভোগান্তির শেষ নেই।

জেলার শৈলকুপা উপজেলার বাসিন্দা আব্দুর রহমান জানান, পেশার প্রয়োজনে প্রায়ই কালীগঞ্জ, কোটচাঁদপুর ও মহেশপুর যেতে হয়। বর্তমানে তিনি মহাসড়ক দিয়ে না গিয়ে গ্রামের মধ্যে দিয়ে মটর সাইকেলে চলাচল করেন। এই সামান্য সড়ক কেন ভালো করা যাচ্ছে না তা ভেবে পাচ্ছেন না বলে জানান। এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ জিয়াউল হায়দার জানান, এই সড়কটুকু নিয়ে তিনিও বিপদে আছেন। চেষ্টা করছিলেন পিএমপি প্রকল্পের আওতায় সড়কটুকু সংষ্কারের। সে লক্ষে উচ্চ পর্যায়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছেন। আশা করছেন দ্রুত সড়কটি সংষ্কারে বরাদ্ধ মিলবে তারাও কাজ করাতে পারবেন। তবে আপাতত চলাচলের জন্য উপযোগি রাখতে ক্ষুদ্র মেরামক চলছে বলে তিনি জানান।

সর্বশেষ খবর
menu-circlecross-circle linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram