২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

ঝিনাইদহের মোবারকগঞ্জ চিনিকলে মবিল ক্রয়ে অনিয়মের অভিযোগ

প্রতিনিধি :
শরিফুল ইসলাম রোকন
আপডেট :
জানুয়ারি ৭, ২০২১
23
বার খবরটি পড়া হয়েছে
শেয়ার :
| ছবি : 


স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহঃ ঝিনাইদহ কালীগঞ্জের অন্যতম ভারি শিল্প প্রতিষ্ঠান মোবারকগঞ্জ চিনিকলে লুব্রিকেন্ট মোবিল ক্রয়ে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। স¤প্রতি মিলের ২০২০-২০২১ মাড়াই মৌসুমে ব্যবহারের জন্য ৪১ লাখ টাকা মূল্যের ৫৬ ব্যারেল লুব্রিকেন্টস ক্রয় করা হয়। যার প্রতি ব্যারেলে ২০ থেকে ২৫ লিটার কম পাওয়া গেছে। ঘটনা তদন্তে ২৪ ডিসেম্বর পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে চিনিকল কর্তৃপক্ষ। ৫৬ ব্যারেলে প্রায় ১১৩৭০ লিটার লুব্রিকেন্ট আনা হয়েছে খুলনার যমুনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেড থেকে। তবে কম পড়া লুব্রিকেন্টের দ্বায়ভার নিচ্ছে না সংশ্লিষ্ট চিনিকল বা সরবরাহকারী যমুনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেড। কম পড়া এ লুব্রিকেন্টের প্রতি লিটারের মূল্য ধরা হয়েছে ২৫০ থেকে ৬১০ টাকা। এসব মবিল আনার দ্বায়িত্বে ছিলেন, মিলের টিএলআর মাসুদ রানা।

মিল কর্তপক্ষ ও তদন্ত কমিটি প্রাথমিক ভাবে ধারনা করছে লুব্রিকেন্ট আনার পথে হয়তো ব্যারেল থেকে এসব লুব্রিকেন্টস বের করে সরিয়ে ফেলা হয়েছে। যা তারা অন্যস্থানে বিক্রি করে দিয়েছে। তবে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত এখনি তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। তদন্ত কমিটিতে রয়েছে মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক স্বাক্ষরিত তদন্ত কমিটিতে রয়েছে মিলের ব্যবস্থাপন (হিসাব) মোঃ জাহিদুল ইসলাম, উপ-ব্যবস্থাপক (পরিবহন প্রকৌশল) রায়সুল ইসলাম, উপ-ব্যবস্থাপক (সংস্থাপন) আশেকুজ্জামান, উপ-ব্যবস্থাপক (উৎপাদন) জাকির হোসেন ও সহ-ব্যবস্থাপক (যন্ত্র কৌশল) সাধন কুমার মন্ডল। কমিটিকে আগামী ১০ কর্ম দিবসের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। তদন্ত কমিটির এক সদস্য নাম প্রকাশ না করে জানান, মিলের যে কোন মালামাল ক্রয়ে পৃথক দু’টি কমিটি করা হয়। একটি কমিটি ক্রয় করেন বাকি একটি কমিটি বুঝে নেন।

কিন্তু কিভাবে কম থাকা লুব্রিকেন্টস মিল স্টোরে ঢুকলো তা বোধগম্য নয়। এদিকে মিলের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপক এডিএম আনোয়ার হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ঘটনা তদন্তে কমিটি করা হয়েছে। তদন্তে দোষি যেই হোক তার বিরুদ্ধে আইনানুযায়ি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মিল কর্তৃপক্ষ দুর্নীতি প্রতিরোধে তৎপর রয়েছে। স¤প্রতি ট্রাকটর থেকে তেল চুরির একটি ঘটনা জানার পরই জড়িতকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া শুকনা আখ কেনার অপরাধে ইক্ষু ক্রয় কেন্দ্রের সিআইসি রায়হান উদ্দীন ও সিডিএ কাম সিআইসি কামাল হোসাইন নামে দু’জনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। দূর্নীতি অনিয়ম কোন ভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। খোঁজ নিয়ে আরো জানা গেছে, চলতি মাড়াই মৌসুমে দেশের ৬ টি মিল সরকার বন্ধ ঘোষণা করেছে। এরপরই মিলটি ঘুরে দাড়াতে তৎপর হয়ে উঠে।

এরই ধারাবাহিকতায় মিলের চিনি উৎপাদনে গড় আহরণ বেড়েছে। বৃহস্পতিবার চলতি মাড়াই মৌসুমের ২০ কার্যদিবসে চিনি আহরণের গড় ছিল ৫.৩০। যা একই কার্যদিবসে গত মৌসুমে ছিল ৪.৮৫। চলতি মাড়াই মৌসুমে মিলটি চিনি উৎপাদনে আশার থেকে বেশি ভালো করবে বলে আশা করছেন এডিএম আনোয়ার। তবে, দক্ষিণাঞ্চলের গুরত্বপূর্ণ এই ভারি শিল্প প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনায় অব্যবস্থাপনা, মোটা অংকের ব্যাংক সূদ প্রদান ও মান্দাতার আমলের ম্যানুয়াল পদ্ধতির কারখানা ও আখের জাত উন্নয়ন না হওয়া চিনি আহরণ কমছে। অন্যদিকে, চিনি উৎপাদনের সাথে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পর্যায়ের শ্রমিক মজুরী খরচ, আখ ক্রয়, মিলে অপরিস্কার আখ সরবরাহ, রস ধারন ক্ষমতার অতিরিক্ত দৈনিক আখ মাড়াই, পরিবহন খরচ, কারখানা মেরামত এবং বয়লারের জ¦ালানীসহ প্রায় অর্ধশতাধিক খাতের খরচ মিটিয়ে প্রতি বছরই বাড়ছে চিনি উৎপাদন খরচের এই অংক। সে তুলনায় বাড়েনি চিনির বিক্রয় মূল্য। ফলে বছরের পর বছর মিলটিকে লোকসান দিতে হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর
menu-circlecross-circle linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram