২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

গাংনীতে গৃহবধুকে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ

প্রতিনিধি :
শরিফুল ইসলাম রোকন
আপডেট :
অক্টোবর ১৬, ২০২০
21
বার খবরটি পড়া হয়েছে
শেয়ার :
| ছবি : 

গাংনী প্রতিনিধি : মেহেরপুরের গাংনীতে রুবিনা খাতুন (২২) নামের এক গৃহবধুকে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার স্বামীর বিরুদ্ধে। পরোকিয়া প্রেমে বাধা দেওয়ায় তাকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয় বলে অভিযোগ তার স্বজনদের। শুক্রবার সকালে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। নিহত রুবিনা খাতুন সদর উপজেলার টেঙ্গারমাঠ গ্রামের রবকুল হোসেনের মেয়ে এবং একই উপজেলার মনোহরদিয়া গ্রামের হাতেম আলীর ছেলে ও বামুন্দী ওয়েভ ফাউন্ডেশনের মাঠ কর্মী মিলন হোসেনের স্ত্রী।

নিহত গৃহবধুর নানী হালিমা খাতুন জানান,প্রায় ৪ বছর পূর্বে পারিবারিক ভাবে মিলনের সাথে রুবিনার বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পর থেকে রুবিনার উপর নানা ভাবে অন্যায় অত্যাচার করে স্বামী মিলন হোসেন ও তার বাবা মা। অত্যাচার নির্যাতন সইতে না পেরে একাধিকবার সংসার ছেড়ে চলে আসে। স্থানীয় ও পারিবারিক ভাবে সমস্যা সমাধান করায় তাকে কয়েকবার স্বামীর সাথে পাঠানো হয়। শুক্রবার ভোরে বামুন্দীর ভাড়া বাড়িতে নির্যাতন শেষে রুবিনার শরীরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করে। রুবিনার বড় মামী শুকতারা জানান, রুবিনার ৫ বছর বয়সে তার বাবা ও মাকে হারিয়ে নানী হালিমার কাছে বড় হয়। এরপর তার নানী পরের বাড়ি কাজ করে ও অন্য’র জমিতে মরিচ তুলে অনেক কষ্ট করে রুবিনাকে লালন পালন করে। এরপর মিলন হোসেনের সাথে বিয়ে দেয়। বিয়ের পর থেকে নির্যাতন করে আসছিলো মিলন।

রুবিনার খাতুনের ২ বছরের একটি মেয়ে আছে তার নাম মনিকা। মনিকার জন্মের পরপরই মিলন হোসেন রুবিনাকে তালাক দেয়। পরে আমঝুপি ইউনিয়র পরিষদে মামলা দায়ের করা হলে ইউপি চেয়ারম্যান,ইউপি সদস্য,স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও উভয় পরিবারের সমঝোতায় পুনরায় সংসার শুরু হয়। কিন্তু মিলন হোসেনের পরোকিয়া প্রেমে বাধা দেওয়ার কারনে প্রায় প্রতিদিনই নির্যাতন করতো। নির্যাতন করার পর পুড়িয়ে হত্যা করে। এ ঘটনার পর শিশু মনিকাকে নিয়ে পালিয়ে যায় মিলন হোসেন। আমরা পরিবারে পক্ষ থেকে মিলনের ফাঁসি দাবি করছি। রুবিনার চাচাতো মামী রিপনারা জানান,রুবিনাকে রাতভর নির্যাতন করার পর আগুন দিয়ে পোড়ানো হয়।

এরপর মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসে। তখন বিষয়টি পরিবারের সদস্যরা জানতে পারে। আমরা হত্যাকারী মিলনের দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তি দাবি করছি। মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা: রফিকুল ইসলাম জানান,রুবিনাকে মৃত অবস্থায় শুক্রবার সকাল ৭ টায় মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে আনা হয়। জরুরী বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক সউদ আলীর উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি আরো জানান,রুবিনার শরীরের বিভিন্ন অংশে পোড়া রয়েছে। বাড়ির মালিক বামুন্দী পশ্চিমপাড়ার আশরাফুল ইসলাম জানান,গত এক সপ্তাহ আগে বাড়ি ভাড়া নেয়। বৃহস্পতিবার রাত ৯টায় রুবিনা খাতুন বাঁচাও বাঁচাও চিৎকার করে।

চিৎকার শুনে বের হয়ে দেখি রুবিনার শরীরের আগুন জ্বলছে। আমরা দ্রত তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় হুদা ক্লিনিকে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায় উন্নতি না হওয়ায় আমার স্ত্রী শামিমা আক্তার রিতা তাকে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পথে ভোরে গাংনী উপজেলার চেংগাড়া নামক স্থানে তার মৃত্যু হয়। মেহেরপুর সদর থানার ওসি তদন্ত আমিরুল ইসলাম জানান,রুবিনার মরদেহ পুলিশ হেফাযতে রয়েছে। ময়না তদন্ত শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। গাংনী থানার ওসি মো: ওবাইদুর রহমান জানান,ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত শেষে এ ঘটনার রহস্য উৎঘটন হবে। তবে এখনই নিশ্চিত কোন তথ্য বলা সম্ভব হচ্ছেনা।

সর্বশেষ খবর
menu-circlecross-circle linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram