২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

লাখ টাকা ঋণের প্রলোভন দেখিয়ে কোটি টাকা নিয়ে সটকেছে এনজিও

প্রতিনিধি :
আতিকুর রহমান ফরায়েজী
আপডেট :
আগস্ট ২১, ২০২০
43
বার খবরটি পড়া হয়েছে
শেয়ার :
কোটি টাকা নিয়ে সটকেছে এনজিও
কোটি টাকা নিয়ে সটকেছে এনজিও | ছবি : কোটি টাকা নিয়ে সটকেছে এনজিও

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধিঃ কোটি টাকা নিয়ে সটকেছে এনজিও। চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে মানব কল্যাণ সংস্থা (মাকস্) নামের একটি এনজিওর কর্মীরা সহস্রাধিক গ্রাহকের সঞ্চয় আমানতের কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে রাতারাতি লাপাত্তা হয়ে গেছে । এ ঘটনায় উপজেলাব্যাপী তোলপাড় শুরু হয়েছে। মাত্র দু’সপ্তাহের ব্যবধানে হাতিয়ে নেয়া হয়েছে এসব টাকা। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকরা জীবননগর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।

ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের অভিযোগে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলা শহরের আঁশতলা পাড়ার গোলাম রসুলের ছেলে শাহীনের দ্বিতল বাড়িটি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত মানব কল্যাণ সংস্থার জীবননগর উপজেলা শাখা অফিসের নামে ৫ আগস্ট ভাড়া নেয় প্রতারক চক্রটি। এরপর ভুয়া সংস্থাটির কর্মীরা প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের হতদরিদ্র ও অসহায় পরিবারের ৩০-৩৫ জন মহিলাকে নিয়ে একটি করে সমিতি তৈরি করেন। সমিতির গ্রাহকদের হাতে তুলে দেয়া হয় মানব কল্যাণ সংস্থার (মাকস্) সঞ্চয় আমানতের বই। মাত্র ১৫ দিনের ব্যবধানে ওই চক্রটি উপজেলার বাঁকা, মিনাজপুর, সুটিয়া, বকুন্ডিয়া, রাজাপুর, মানিকপুর, গোয়ালপাড়া, সদরপাড়া, হরিপুর, হাবিবপুর গ্রামসহ বিভিন্ন গ্রামে ৫০টি সমিতি তৈরি করে প্রত্যেক গ্রাহকের কাছ থেকে পাঁচ হাজার থেকে দশ হাজার টাকা পর্যন্ত সঞ্চয় আদায় করেছে। এভাবে তারা সহস্রাধিক গ্রাহকের কাছ থেকে কোটি টাকা সঞ্চয় আমানত সংগ্রহ করেছে।

 চক্রটি প্রত্যেক গ্রাহককে ২০ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) বিকেলে তাদের কার্যালয়ে এসে ঋণ নিতে বলেন। সে মোতাবেক বৃহস্পতিবার (২০ আগস্ট) সমিতির গ্রাহকরা অফিসে এসে দেখতে পান মানব কল্যাণ সংস্থার প্রধান ফটকে তালা ঝুলছে।

 ওই অফিসের আশপাশের লোকজন এ সময় সমিতির গ্রাহকদেরকে জানায়, সংস্থাটির কর্মীরা অফিসে তালা দিয়ে পালিয়ে গেছে। এক পর্যায়ে অসহায় গ্রাহকদের কাছে সংস্থাটির পক্ষ থেকে দেয়া ব্যবস্থাপকের মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও তা বন্ধ পান তারা। অবস্থা বেগতিক দেখে বাড়ির মালিক মানব কল্যাণ সংস্থার সাইন বোর্ডটি খুলে ফেলেন।

 ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহক বাঁকা গ্রামের মাহাতাব মোল্লা জানান, সংস্থাটির কর্মীরা তার বাড়িতে এসে স্ত্রীকে ঋণ দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে সমিতি তৈরি করে সঞ্চয়ের নামে ১০ হাজার টাকা নেয়। এ সময় তাকে বলা হয়, যেসব সদস্য পাঁচ হাজার টাকা সঞ্চয় জমা দেবে তারা ৫০ হাজার টাকা এবং যারা দশ হাজার টাকা জমা দেবে তারা এক লাখ টাকা ঋণ পাবে। এছাড়া যারা ৫০ হাজার টাকা জমা দেবে তারা প্রতি মাসে ৪ হাজার টাকা এবং যারা ১ লাখ টাকা জমা দেবে তারা প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা করে মুনাফা পাবে। এভাবে সহসস্রাধিক গ্রাহকের কাছ থেকে আমানত নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির সংগ্রহ দাঁড়ায় প্রায় কোটি টাকা।

 তিনি আরও জানান, সমিতির গ্রাহক অন্তর্ভুক্তি হওয়ার পর প্রত্যেকের কাছ থেকে ২৫০ টাকা করে নিয়ে একটি করে সঞ্চয় আমানতের পাস বই দেয়া হয়েছে। প্রত্যেকটি সমিতির নামে দেয়া হয়েছে মাসিক খাতা ও রেজুলেশন বই।

 গোয়ালপাড়া গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত রিজিয়া বেগম বলেন, তিনি প্রতি লাখে মাসিক ১০ হাজার টাকা মুনাফার আশ্বাসে এক লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছেন। কিন্তু অফিসে এসে সংস্থার কর্মীদের কাউকে না পেয়ে টাকা ফেরত না পাওয়ার আশংকায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।

 অপর ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারী হরিপুর গ্রামের এনামুল হক অভিযোগ করে বলেন, মানব কল্যাণ সংস্থার কাছে বাড়ি ভাড়া দেয়া মালিক দায় এড়াতে পারেন না।

 এ ব্যাপারে জীবননগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ঘটনার ব্যাপারে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে

সর্বশেষ খবর
menu-circlecross-circle linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram