২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কালীগঞ্জে তৈরি হচ্ছে পরিবেশ বান্ধব পাটের জুতা, রপ্তানি হচ্ছে উন্নত বিশ্বের বিভিন্ন দেশে

প্রতিনিধি :
শরিফুল ইসলাম রোকন
আপডেট :
আগস্ট ৩০, ২০২০
80
বার খবরটি পড়া হয়েছে
শেয়ার :
| ছবি : 


স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহঃ ঝিনাইদহ কালীগঞ্জে তৈরি হচ্ছে পরিবেশ বান্ধব পাটের জুতা। এসব জুতা রপ্তানি হচ্ছে উন্নত বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। জুতা তৈরির কাজ করছেন স্থানীয় প্রায় ৪০০ নারী। ফলে অর্থনৈতিকভাবে সচ্ছল হচ্ছে তাদের পরিবার। দেশের ঐতিহ্য এ পাট দিয়ে জুতা তৈরি করছে ‘অ্যামাস ফুটওয়ার লিমিটেড’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান। এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওবাইদুল হক রাসেল নামে এক যুবক।

বাড়ি কালীগঞ্জ শহরের দক্ষিণ আড়পাড়ায়। আর তার প্রতিষ্টানটি অবস্থান ঝিনাইদহ-যশোর মহাসড়কের রঘুনাথপুর বাসষ্টান্ডের পাশে কারখানাটি। দেশে যখন ‘লোকসানের কারণ দেখিয়ে’ রাষ্ট্রায়ত পাটকল গুলো বন্ধ করা হচ্ছে, তেমন সময় এমন উদ্যোগ সাড়া ফেলছে কালীগঞ্জ অঞ্চলে। এই কারখানায় তৈরি জুতা ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, স্পেন ছাড়াও চীন, জাপানে রফতানি করা হচ্ছে।

খুব অল্প সময়ে হাতে তৈরি এই জুতার ইউরোপ ও আমেরিকার বিভিন্ন দেশে বেশ চাহিদার সৃষ্টি হয়েছে। আর এই জুতা তৈরির কাজ করছে এলাকার প্রায় ৪০০ নারী। এদের অধিকাংশই গৃহিণী। বাড়ির কাজের পাশপাশি তারা হাতে পাটের জুতা তৈরি করছেন। অ্যামাস ফুটওয়ার লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওবাইদুল হক রাসেল জানান, পড়াশোনা শেষ করে তিনি নিজে কিছু করতে চেয়েছিলেন। ঢাকায় প্রথম গার্মেন্ট ব্যবসা শুরু করেন। এরপর ২০১৬ সালের দিকে এলাকার মানুষের জন্য কিছু করার আগ্রহ নিয়ে এবং দেশের পাট শিল্পকে বিশ্বে তুলে ধরতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন।

এরপর কালীগঞ্জ উপজেলার যশোর-ঝিনাইদহ মহাসড়কের রঘুনাথপুর বাজারের পাশে ৪৪ শতক জমি কিনে পাটের জুতা তৈরির কারখানা স্থাপন করেন। দেশ এবং বিদেশ থেকে কিছু মেশিন এনে কাজ শুরু করেন। এরপর বিভিন্ন পাটের কারখানা থেকে কাঁচা পাট কিনে এনে জুতা তৈরি শুরু করেন। ২০১৭ সাল থেকে এখানে উৎপাদিত পাটের জুতা দেশের বাইরে রপ্তানি করা হচ্ছে। কারখানাটিতে ৮০ জন স্থায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছে। এছাড়াও এলাকার প্রায় ৪০০ নারী কারখানা থেকে অর্ডার নিয়ে বাড়িতে বসে কাজ করেন।

তাদের ফ্রি প্রশিক্ষন দেওয়া হয়েছে। প্রতি জোড়া জুতা তৈরির জন্য তারা বিল পেয়ে থাকেন। একেকজন নারী বাড়ির কাজের পাশাপাশি জুতা তৈরি করে মাসে চার হাজার থেকে দশ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করেন। উৎপাদিত জুতা দুই থেকে ১৫ ডলার পর্যন্ত দামে বিক্রি হয়। ইতোমধ্যে এই কারখানায় উৎপাদিত পাটের জুতা দিয়ে প্যারিসে কয়েকটি ফ্যাশন শো হয়েছে। তিনি বলেন, ‘নিজেই এই জুতার মার্কেটিং করি।

নিজেই বায়ারদের সাথে কথা বলি এবং রফতানি করি।’ অ্যামাস ফুটওয়ার লিমিটেডের ম্যানেজার মাসুদ রানা জানান, এই কারখানায় ছয়টি ধাপে একটি জুতা তৈরি হয়। সোল তৈরি হয় রাবার দিয়ে। জুতার বাকি অংশ তৈরি হয় পাট দিয়ে। আর এই কাজ গুলো সম্পূর্ণ হাতেই করা হয়। প্রতি মাসে তাদের কারখানা থেকে ৩০ থেকে ৪০ হাজার জুতা রফতানি করা হচ্ছে। এই জুতার বৈশিষ্ট্য হলো ব্যবহারের পরে ফেলে রাখলে এটি মাটির সঙ্গে মিশে যায়। ফলে এটি সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব।

সর্বশেষ খবর
menu-circlecross-circle linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram