আলমডাঙ্গার ছত্রপাড়ার ক্ষিতীশ মজুমদারের জমি নিয়ে মারামারি মামলায় লাল খাঁ গ্রুপের সাইফুল গ্রেফতার
আলমডাঙ্গার ছত্রপাড়ার ক্ষিতীশ মজুমদারের ১৫২ বিঘা জমি নিয়ে মারামারি মামলায় লাল খাঁ গ্রুপের সাইফুলকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত ১৯ সেপ্টেম্বর ছত্রপাড়ার মধু মেম্বর তার লোকজন নিয়ে বিবাদমান জমিতে তার চাষ করা কচু তুলতে গেলে প্রতিপক্ষ লাল খাঁ গ্রুপের হামলা করে ৫ জনকে রক্তাক্ত জখম করে। পরে মধু মেম্বারের পক্ষ আলমডাঙ্গা থানায় বেশ কয়েকজনকে আসামী করে মামল্ াদায়ের করে।
জানা গেছে, উপজেলার ছত্রপাড়ার আব্দুল ওহাবের ছেলে সাইফুল ইসলাম(৩৫) গ্রামের লার খাঁ গ্রæপের সাথে চলা ফেরা করে। ছত্রপাড়ার ১৫২ বিঘা অর্পিত সম্পত্তি নিয়ে গ্রামে দ্বন্দ্ব রয়েছে। এক পক্ষের নেতৃত্ব দিচ্ছেন আওয়ামীলীগ নেতা শরিফ জোয়ার্দ্দার ও অন্যপক্ষে বর্তমানে নেতৃত্বে আছেন ছত্রপাড়া গ্রামের লাল খাঁ। লাল খাঁ গ্রুপের মধু মেম্বার তার দখলে থাকা জমিতে কচুর আবাদ করেছিল। বর্তমানে ওই কচু মাঠ থেকে তুলে নেওয়ার সময় হয়েছে। কচু তুলতে মধু মেম্বর কৌশলের আশ্রয় নিয়েছে। সে কিছুদিন আগে লাল খাঁ গ্রুপ থেকে শরিফ জোয়ার্দ্দার গ্রুপে যোগ দেয়। বিষয়টি লাল খাঁ গ্রুপ ভালভাবে নিতে পারে নি। তারা শর্ত দেয় যে, মধু মেম্বর নিজেরা ওই ক্ষেতের কচু তুলবে। শরিফ জোয়ার্দ্দারের কোন লোক তারা ওই সম্পত্তিতে দেখতে চাই না। কিন্তু গত ১৯ সেপ্টেম্বর মধু মেম্বর শরিফ জোয়ার্দ্দার পক্ষের ১২/১৩ জন নেতা নিয়ে কচু তুলতে যায়। সংবাদ পেয়ে প্রতিপক্ষ লাল খাঁ গ্রুপের গঞ্জের আলীর ছেলে ইলিয়াস, শমসের আলীর ছেলে জাহাঙ্গীর, মনির উদ্দীনের ছেলে লাল্টু ও মিন্টুসহ বেশ কিছু ব্যক্তি তাদের উপর চড়াও হয়। এই বিবাদে শরিফ জোয়ার্দ্দারের পক্ষের ৫ জন রক্তাক্ত জখম হয়। পরে লাল খাঁ গ্রæপের কয়েকজনের নামে মামলা দায়ের করে। ওই মামলায় আলমডাঙ্গা থানার এসআই শফিকুল ইসলাম তাকে গ্রেফতার করে নিয়ে আসে।
প্রসঙ্গত, আলমডাঙ্গার ছত্রপাড়া গ্রামের ধনাঢ্য ক্ষিতীশ মজুমদার ’৪৭ সালের দেশ বিভাগের আগে বাড়িঘর-সহায় সম্পত্তি ছেড়ে ভারতে চলে যান। পরবর্তিতে তার রেখে যাওয়া ১৫২ বিঘা জমি শত্রু সম্পত্তি ও বাংলাদেশে পরবর্তিতে অর্পিত সম্পত্তিতে পরিণত হয়। এই বিরাট সম্পত্তির লোভে ছত্রপাড়া ও অভয়নগর দুগ্রামবাসি দুটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে দখলের প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হয়। সম্পত্তি দখলের জন্য পরষ্পর গ্রুপের রক্ত ঝরাতে তারা রক্তলোলুপ হয়ে ওঠেছে। এ বিবাদে প্রতিপক্ষের হাতে প্রাণ গেছে কয়েকজন গ্রামবাসির। আহত-পক্ষু হয়েছেন অনেকে। যুগের পর যুগ ধরে চলমান এ দ্বন্দ্ব। ক্ষিতীশ মজুমদারের ১৫২ বিঘা জমির মধ্যে বেশ কিছু জমি অনেকে জাল দলিল তৈরি করে নিয়ে দখলের অপচেষ্টা করে আসছে। যখন যে দল ক্ষমতায় থাকেন, তাদের পাতি নেতারা রাজনৈতিকভাবে প্রভাব বিস্তার করে, থানা পুলিশের উপর প্রভাব বিস্তার করে সমস্ত সম্পত্তি নিজেরা দখলের অপচেষ্টা করেন। প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে নানা অপবাদ ও দোষারোপ করে তাদের ঘরবাড়ি ছাড়া করে নেতা উপনেতারা নিজেদের মনস্কাম পূরণের অপচেষ্টা করেন। এই নিয়ে বিবাদ যুগ থেকে যুগান্তরব্যাপি বিস্তৃত হতে থাকে।