১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আলমডাঙ্গায় স্বর্ণালঙ্কার আটকের ঘটনায় গ্রেফতার আতঙ্কে দর্শনার অনেকের গা ঢাকা

প্রতিনিধি :
শরিফুল ইসলাম রোকন
আপডেট :
আগস্ট ২৩, ২০২১
26
বার খবরটি পড়া হয়েছে
শেয়ার :
| ছবি : 

আলমডাঙ্গায় আড়াই কেজি স্বর্ণালঙ্কার আটকের ঘটনায় গ্রেফতার আতঙ্কে দর্শনার অনেকেই গা ঢাকা দিয়েছেন। এ ঘটনায় ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হলেও এ পর্যন্ত গ্রেফতার হয়েছে ৪ জন। গ্রেফতার আতঙ্ক বিরাজ করছে দর্শনা ও আশপাশ এলাকার স্বর্ণ চোরাকারবারীদের মধ্যে। গ্রেফতার আতঙ্কে অনেকেই ছেড়েছেন বাড়ি।

গত বুধবার বিকেল ৩টায় চুয়াডাঙ্গা-কুষ্টিয়া সড়কের আলমডাঙ্গা পৌর সীমানা গেটের বন্ডবিল নামক স্থানে স্বর্ণ চোরাচালান বিরোধী যৌথ অভিযান চালায় চুয়াডাঙ্গা ও আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ। চুয়াডাঙ্গা থেকে ধাওয়া করে প্রাইভেটকারসহ আটক করা হয় দর্শনা পৌর এলাকার শ্যামপুরের নুর ইসলামের ছেলে মোহাম্মদ বাপ্পী (৩০), চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার বনানীপাড়ার রিপন হোসেনের ছেলে সম্রাট হোসেন (২১) ও মাদারীপুর জেলার সদর উপজেলার জালালপুর গ্রামের বাবু হাওলাদারের ছেলে সুমন হাওলাদারকে (৩৫)।

আটককৃতরা আন্তঃজেলা সোনা চোরাচালান চক্রের সক্রিয় সদস্য বলে পুলিশ জানায়। ভারত সীমান্তবর্তী দর্শনা থেকে সোনার একটি বড় চালান প্রাইভেটকারযোগে ঢাকার উদ্দ্যেশে রওনা হয়েছে এমন তথ্য গোপন সূত্রে জানতে পেরে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ আবু জিহাদ ফখরুল আলম খানের নেতৃত্বে পুলিশ চুয়াডাঙ্গা শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় অবস্থান নেয়। পুলিশের একটি দল (ঢাকা মেট্রো-গ ১৭-৮৩৩২) এলিয়ন প্রাইভেটকারের পিছু ধাওয়া করে।

এদিকে সংবাদ পেয়ে আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ আলমগীর কবীর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রনি আলম নূরকে সাথে নিয়ে পুলিশের আরও একটি টিম নিয়ে চুয়াডাঙ্গা-কুষ্টিয়া সড়কের বন্ডবিল এলাকায় পৌর সীমানা গেটের সামনে অবস্থান নেয়। বিকেল ৩টায় সন্দেহমূলকভাবে প্রাইভেটকারের গতিরোধ করে পুলিশ। প্রাইভেটকার তল্লাশি চালিয়ে চালকের সিটের পেছনে বাঁশপাতা রঙের মোটা কাগজে ক্রসটেপ দিয়ে মোড়ানো ৬টি বান্ডিলের ভেতর থেকে স্বর্ণের বালা, নেকলেস, আংটি, কানের দুলসহ বিভিন্ন ধরণের স্বর্ণালঙ্কার উদ্ধার করে পুলিশ। প্রাইভেটকারে থাকা অভিযুক্ত ৩ সোনা বহনকারীকে গ্রেফতারসহ জব্দ করা হয় সোনা চোরাচালানে ব্যবহৃত প্রাাইভেটকারটি। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয় উদ্ধারকৃত সোনার গয়নার ওজন ২ কেজি ৫৮৫ গ্রাম।

২২ ক্যারেট সোনা দিয়ে প্রস্তুত উদ্ধারকৃত স্বর্ণালংকারের বাজার মূল্য ১ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। গ্রেফতারকৃত ৩ জনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বেশকিছু তথ্য পায় পুলিশ। চালক বাপ্পি জানান, ভারতের কোলকাতার বিজন হালদারের স্বর্ণালঙ্কার দামুড়হুদার পুড়োপাড়া থেকে তিনি ঢাকায় নিয়ে যাচ্ছিলেন। ঢাকার কল্যাণপুর থেকে ভবেশ নামক এক ব্যক্তি তা গ্রহণ করতেন। পরদিন বৃহস্পতিবার ভোরে জীবননগর উপজেলার নারায়নপুর গ্রামে শ্বশুর বাড়ি থেকে দর্শনা পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর বিল্লাল হোসেনকে গ্রেফতার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।

গ্রেফতারকৃত ৪ জনের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ৯ জনের বিরুদ্ধে আলমডাঙ্গা থানায় দায়ের করা হয় মামলা। এ মামলায় গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। মামলার অন্যান্য আসামির তালিকায় রয়েছেন শ্যামপুরের নাহিদ, জীবননগর সেনেরহুদার ফয়সাল, মাহাতাব মানিক ও হরিণাকুন্ডু হিংগাপাড়ার ভবেশ ওরফে তপন হালদারসহ ৯জন। এদিকে স্বর্ণ চোরাচালান মামলায় গ্রেফতার আতঙ্ক ছড়িয়েছে দর্শনাসহ আশপাশ এলাকা জুড়ে। এলাকার চিহ্নিত সোনা চোরাকারবারীরা গ্রেফতার আতঙ্কে ছেড়েছে বাড়ি। মামলায় ৯ জনের নাম থাকলেও এলাকা ছেড়েছে অনেকেই।

সর্বশেষ খবর
menu-circlecross-circle linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram