২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

স্বীকৃতি পাওয়ার আগেই চলে গেলেন বিরাঙ্গনা জাহানারা খাতুন

প্রতিনিধি :
শরিফুল ইসলাম রোকন
আপডেট :
নভেম্বর ২৫, ২০২০
25
বার খবরটি পড়া হয়েছে
শেয়ার :
| ছবি : 

মেহেরপুর প্রতিনিধি \ বিভিন্ন দপ্তর ঘুরে ঘুরে রাষ্ট্রিয় স্বীকৃতি ছাড়াই নিরবে চলে গেলেন মেহেরপুরের বিরাঙ্গনা জাহানারা খাতুন (ঈশা)। বিরাঙ্গনা হয়েও তিনি বাড়ি বাড়ি কাপড় বিক্রি আবার কখন শিল পাটা ফেরি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেইনি রাষ্ট্র বা রাজনৈতিক দল। তার মৃত্যুর পরে জানাজা বা দাফনের সময় দেখা যায়নি রাষ্ট্র বা রাজনৈতিক দলের কোন দায়ীত্বশীল ব্যাক্তির।

মঙ্গলবার রাতে তিনি মেহেরপুর কোর্টপাড়াস্থ নিজ বাড়িতে অসুস্থ্য অবস্থায় ইন্তেকাল করেন বিরাঙ্গনা জাহানারা খাতুন (ঈশা)। (ইন্নালিল্লাহি......রাজিউন)। বুধবার সকাল ১০টার সময় মেহেরপুর হোটের বাজার জামে মসজিদ প্রাঙ্গনে মহুমার জানাজার নামাজ শেষে পৌর কবরস্থানে দাফন করা হয়।

জানাগেছে, পাকহানাদারদের পাশবিক নির্যাতন ও গণধর্ষণের শিকার মেহেরপুরের একমাত্র জীবন্ত সাক্ষি ছিলেন তিনি। তবে রাষ্ট্রিয় কোন স্বীকৃতি না পাওয়ায় একবুক বেদনা ছিল তার। বিরাঙ্গনা জাহানারা খাতুনের ছেলে মামুন বলেন, আমার মায়ের মৃত্যুতে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ বা রাষ্ট্রর কোন দায়ীত্বশীল ব্যাক্তি উপস্থিত হয়নি। আমি মনে করি মুক্তিযোদ্ধে আমার মায়ের ভূমিকা নিয়ে রাষ্ট্র যথাযোগ্য মূল্যায়ন করেনি। জাহানারা খাতুন (ঈশা)‘র পরিবার থেকে জানাযায়, পাক সেনাদের গণধর্ষণের শিকার মেহেরপুর সদর উপজেলার পিরোজপুর গ্রামের মফের শেখের কন্যা জাহানারা খাতুন (ঈশা) ১৭ বছর বয়সে ১৯৭০ সালে পিরোজপুর গ্রামের রাজাকার আবুল খাঁর সাথে চাপে পড়ে বিয়ে হয় ঈশা‘র।

এরই মধ্যে শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। আবুল খাঁর রাজাকারে নাম লেখায়। মুক্তিযুদ্ধকালীন মে মাসের দিকে রাজাকার স্বামীর শারীরীক নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে বাড়ি থেকে বের হয়ে আসে মেহেরপুরে। এসময় পাকসেনারা ঈশাকে ধরে নিয়ে যায় মেহেরপুর কোর্টচত্বরে পাকসেনা ক্যাম্পে। সেখানে পাকসেনারা পালাক্রমে ধর্ষন করে। এই লজ্জায় সে আর গ্রামে ফিরতে পারিনি। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে গ্রামে একমাত্র ভাই ফরজ আলীর কাছে গিয়ে আশ্রয় মেলেনি পাকিস্তানী সেনাদের ধর্ষিতা বলে। ফিরে আসে মেহেরপুর শহর। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বিয়ে হয় মান্নান খা নামে এক মোটর সাইকেলের মেকারের সাথে।

সেই স্বামীর সাথে মনোমালিন্য হবার কারণে সম্পর্ক বিছেদ করতে হয়েছে। এর পরে জাহানারা শিল পাটা ফেরি করে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। মান্নান খার ঔরসে জন্ম নেয়া একমাত্র ছেলে মোটর সাইকেলের মেকার মামুন। পাকসেনাদের ধর্ষনের শিকার ঈশা স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে মেহেরপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট কমান্ডা অফিসের কাছে বিভিন্ন সময়ে সাহায্য সহযোগিতা চেয়ে আবেদন করেছে কিন্তু কোন সাহায্য সহযোগিতা মেলেনি।

সর্বশেষ খবর
menu-circlecross-circle linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram