২৩শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১০ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ার ৪৮ দিন পরে এক রশিতে প্রেমিক-প্রেমিকার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

প্রতিনিধি :
শরিফুল ইসলাম রোকন
আপডেট :
আগস্ট ১২, ২০২১
34
বার খবরটি পড়া হয়েছে
শেয়ার :
| ছবি : 

আলমডাঙ্গা নানা বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ার ১ মাস ১৮ দিন পর ঢাকার আশুলিয়ার ভাড়া বাসা থেকে প্রেমিক-প্রেমিকার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গত ১০ আগস্ট মঙ্গলবার রাতের তারা খাওয়া দাওয়া না করেই ঘরের আড়ার সাথে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে। ১১ আগস্ট বুধবার বিকেল ৫ টায় আশুলিয়া থানা পুলিশ প্রেমিক-প্রেমিকার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তবে স্থানীয় পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে আত্মহত্যার ঘটনা বললেও তা অনেকের কাছে রহস্যজনক হিসেবে দেখা দিয়েছে।

জানা গেছে, আলমডাঙ্গার হাউসপুর থেকে মারিয়া খাতুন বন্যা নামের ১৫ বছরের মেয়ে তার বিবাহিত প্রেমিক টুটুল(৩০)“র সাথে গত ২২ জুন তারিখে নানার বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। পরদিন বন্যার পিতা বাদল আলী বাদি হয়ে আলমডাঙ্গা থানায় একটি অভিযোগ করেন। ওই অভিযোগের পর থেকে পুলিশ তাদের খোজ করছিল।

অভিযোগে জানা যায়, কুষ্টিয়ার কুমারখালির মনোহরপুর গ্রামের হাতেম আলীর বিবাহিত ছেলে রাজমিস্ত্রি টুটুল চার মাস আগে ইবি থানার চরপাড়া-রাধারনগর গ্রামের বাদল আলীর বাড়িতে রাজমিস্ত্রির কাজ করতে আসে। সেসময় বাদল আলীর নবম শ্রেনীতে পড়–য়া মেয়ে বন্যার সাথে রাজমিস্ত্রি টুটুল প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। প্রেমের এক পর্যায়ে তারা দু‘জন রাতে বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ার পথে হরিনাকুন্ডু শহরের নৈশপ্রহরীর হাতে ধরা পড়ে। তারা নিজেদেরকে স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিলেও সন্দেহ হওয়ায় ওই নৈশপ্রহরী তাদেরকে হরিনাকুন্ডু থানায় হস্তান্তর করে। পরদিন হরিনাকুন্ডু থানা পুলিশ উভয় পক্ষের অভিভাবকদের থানায় ডেকে জিম্মায় যার যার বাড়িতে দু‘জনকে পাঠিয়ে দেয়।

জানা গেছে, এ ঘটনার পর বাদল তার বাড়িতে না রেখে বন্যাকে আলমডাঙ্গার আনন্দধামের খালাত দুলাভাই মোশাররফের বাড়িতে রেখে যান। মাস খানেক রাখার পর মোশাররফ বন্যাকে আলমডাঙ্গার হাউসপুরে তার নানা ইসতার আলীর বাড়িতে রেখে আসেন। এরপর থেকে বন্যা নানা ইসতার বাড়িতেই ছিল। এর মধ্যে বন্যা কারো মোবাইল ফোন নিয়ে গোপনে প্রেমিক টুটুলের সাথে যোগাযোগ করে। গত ২২ জুন তারিখ সন্ধ্যার পর টুটুল এসে বন্যাকে নিয়ে দ্বিতীয়বার পালিয়ে যায়। তারা পালিয়ে গিয়ে প্রথমে চট্টগ্রামে গিয়ে ওঠে। সেখানে মাস খানেক থাকার পর তারা আশুলিয়ার নবীনগরের পল্লী বিদ্যুতের ডেন্ডাবর এলাকার ফজর আলীর বাসার একটি ছোট কক্ষ ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করে। টুটুল নবীনগরে শ্রমিকের কাজ করে দু‘জনের সংসার চালিয়ে আসছিল।

আশুলিয়া থানার এসআই সফিউল্লাহ জানান, স্থানীয়রা বিকেলে ঘটনা জানানোর পর দু‘জনের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে আত্মহত্যার ঘটনা বলে মনে হয়েছে। তবে তদন্ত করে মৃত্যুর প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে। তিনি জানান, গত ২২ জুন তারা বাড়ি থেকে পালিয়ে চলে আসে। গত ১৯ জুলাই আশুলিয়ার ওই এলাকায় টুটুলের চাচাতো বোনের কাছে আসে। পরে ডেন্ডাবর এলাকার ফজর আলীর বাড়ির একটি কক্ষ স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করে। বিকালে তাদের কক্ষে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখে থানায় খবর দেয় প্রতিবেশীরা।

খবর পেয়ে ঘরের দরজা ভেঙ্গে তাদের দুই জনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রতিবেশীরা পুলিশকে জানিয়েছে তারা সম্প্রতি বিয়ে করেছে। তিনি আরও জানান, আমরা প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি টুটুল ও মারিয়া তাদের এলাকা থেকে পালিয়ে এসেছে। প্রাথমিক ধারণা করা হচ্ছে তারা আত্মহত্যা করেছে। তবে কেন আত্মহত্যা করেছে তা জানা যায়নি। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ময়না তদন্ত শেষে পরিবারের নিকট মরদেহ হস্তান্তর করা হবে।

সর্বশেষ খবর
menu-circlecross-circle linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram