চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় বেগুনের দাম দ্বিগুণ বাড়ায় কৃষকের মুখে হাসি ঝিলিক দেখা যাচ্ছে। এলাকা ঘুরে বেগুন ক্ষেত দেখে এবং বেগুন চাষিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, আবহাওয়া ও পরিবেশ সুন্দর হওয়ায় বেগুনের ভাল ফলন হয়েছে ।
বর্তমানে বাজারে বেগুনের দাম বেড়েছে দ্বিগুণ। প্রতিমণ বেগুন ক্ষেতেই বিক্রি হচ্ছে এক হাজার সাতশ টাকায়। হঠাৎ বেগুনের দাম বাড়ায় বড্ড খুশি চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের বেগুন চাষিরা। গেল সপ্তাহে প্রতি মন বেগুন বিক্রি হয়েছে আটশত থেকে এক হাজার টাকা।
বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে এক হাজার সাত শত টাকা। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় বাম্পার ফলনের সাথে চাহিদা ও দাম বৃদ্ধিতে বেশ লাভবান হচ্ছেন বেগুন চাষিরা। কৃষকরা বিগত দুই বছরের ক্ষতি পুষিয়ে নিয়েছেন এ বছর।গত দুই বছর টানা বৃষ্টির কারণে অকালে গাছ মরে যাওয়ায় বেগুনে কিছুটা লোকসান গুনতে হলেও এ বছর লোকসান পুষিয়ে লাভবান হচ্ছেন চাষিরা।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামের বেগুন চাষি রানা আহমেদ জানান, গত বছর দুই বিঘা জমিতে বেগুন চাষ করেছিলেন তিনি। কিন্ত ঘন বৃষ্টিতে গাছ মরে যাওয়ায় তেমনটা লাভবান হন নি। এ বছর ২০/৩০ হাজার টাকা খরচে মাত্র দুই বিঘা বেগুন চাষ করেন।প্রতি সপ্তাহে ২০-২৫ হাজার টাকার বেগুন বিক্রি করছেন তিনি। বর্তমানে ক্ষেতেই বিক্রি হচ্ছে প্রতি মণ ১৫০০-১৭০০ টাকা দরে।এতে তার প্রতি সপ্তাহে ২৫/৩০ হাজার টাকা আয় হচ্ছে বেগুন বিক্রি থেকে।আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে লক্ষাধিক টাকার বেগুন বিক্রির আশা তার।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার যুগিহদা গ্রামের চাষি হাবিব রহমান জানান,পানি জমে না এমন উঁচু জমিতে বেগুনের চারা রোপন করতে হয়। এরপর সার কীটনাশক ও পরিচর্যা করলে আগাম বেগুনে লাভবান হওয়া যায়। বাজারে বেগুনের চাহিদা থাকায় বেশ মুনাফা আসছে এ বছর।এ বছর চাহিদা বেশি থাকায় বিক্রিতে যেমন ঝামেলা নেই। অনুরুপ ভাবে মুনাফাও অনেক বেশি। এলাকার ব্যাপারীরা ক্ষেত থেকে বেগুন কিনে সারা দেশে বিক্র করছেন। বেগুন চাষকে কেন্দ্র করে দিনমজুর কৃষি শ্রমিকরাও পড়েছেন কাজের ব্যস্থতায়। স্থানীয় ব্যাপারীরা সারা দিন গ্রামে গ্রামে বেগুন কিনে ট্রাকে রাতে পাঠিয়ে দিচ্ছে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায়। পরদিন সকালে টাটকা সবজি বিক্রি করে ট্রাকেই টাকা পাঠাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।
সবজি ব্যবসায়ী শুকুর আলী জানান, সারা দিন ক্ষেত থেকে বেগুন কিনে ট্রাকে ভরে রাতে রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন বাজারে পাঠান। পারদিন সকালে বেগুন বিক্রি হলে ট্রাক চালকের মাধ্যমেই চলে আসে টাকা। কোন ঝামেলা ছাড়াই কয়েক বছর ধরে চলছে তার এ ব্যবসা।মূলত এ বেগুন চাষের মাধ্যেমে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি আয় বেড়েছে এ জনপদের।সবজি চাষে ভাগ্যের পরিবর্তন করেছেন অনেকেই। কিছুদিন আগেও যাদের পেটের ভাত নিয়ে চিন্তা ছিল তারাও এখন বাড়ি গাড়ির মালিক। পাল্টে গেছে জীবন যাত্রার মান। বেগুনের গুণ বাড়ায় হাসি ফুটেছে চাষিদের মছে।
চুয়াডাঙ্গা উপজেলা কৃষি অফিস জানায়,চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার মাটি বেগুন চাষের জন্য বেশ উপযোগী।উপজেলা কৃষি অফিস লাভজনক ফসল বেগুন চাষে কৃষকদের নানান রকম সহযোগিতা ও পরামর্শ প্রদান করে আসছেন। আগের চেয়ে চলতি মৌসুমে বেগুন চাষ বৃদ্ধি হয়েছে। আবহাওয়ার অনুকুল পরিবেশ থাকায় বেগুন এর বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। বাজারে চাহিদা থাকায় বেশ মুনাফা পাচ্ছেন উপজেলার বেগুন চাষীরা।