২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কুষ্টিয়ার মিরপুর নান্দিয়ায় স্বামী ৪ বছর বিদেশে স্ত্রী ৩ মাসের অন্তঃসত্ত্বা

প্রতিনিধি :
শরিফুল ইসলাম রোকন
আপডেট :
মে ৫, ২০২১
34
বার খবরটি পড়া হয়েছে
শেয়ার :
| ছবি : 


স্বামী আতিক হোসেন সাড়ে ৪ বছর মালয়েশিয়ায়। অথচ, স্ত্রী মণিকা ওরফে মনিরা খাতুন (২০) স্বামীর অনুপস্থিতিতে এখন ৩ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। নেপথ্যের নায়ক দশম শ্রেণিতে পড়ুয়া দেবর প্রবর রিয়াজ ভাবির গর্ভের সন্তান নষ্ট করতে ব্যর্থ হয়ে ঘটনা ধামাচাপা দিতে ব্যস্ত। অন্যদিকে, স্বামীর সংসার থেকে বিতাড়িত হয়ে মণিকা খাতুন ওরফে মনিরা খাতুন এখন পার্শ্ববর্তি আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। এ ঘটনাটি ঘটেছে কুষ্টিয়া জেলার মিরপুর উপজেলার সীমান্তবর্তি গ্রামে নান্দিয়ায়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গ্রামের মানুষ দুভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে।

ঘটনাস্থল ঘুরে জানা যায়, আলমডাঙ্গা উপজেলার সীমান্তবর্তি গ্রাম নান্দিয়া। এটি কুষ্টিয়া জেলার মিরপুর উপজেলায় অবস্থিত। এই গ্রামের যুবক আতিক হোসেন প্রায় ৬ বছর পূর্বে বিয়ে করেন মণিকা খাতুন ওরফে মনিরা খাতুনকে। বিয়ের দেড় বছরের মাথায় আতিক হোসেন মালয়েশিয়ায় চলে যায়। এরই মাঝে ৪ বছরের অধিক সময় অতিক্রান্ত হলেও আতিক আর বাড়ি ফেরেনি। কিন্তু স্বামীর অনুপস্থিতিতেই মণিকা ওরফে মনিরা খাতুন (২০) গর্ভবতী হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ উঠেছে পাশের বাড়ির দেবর রিয়াজের সাথে অবৈধ শারীরিক সম্পর্কের কারণেই মণিকা অরফে মনিরা গর্ভবতী হয়েছে।

এদিকে, মণিকা ওরফে মনিরার গর্ভপাত ঘটাতে অনেক চেষ্টা করেছে। আশপাশের বেশ কয়েকজন কবিরাজের নিকট থেকে গাছগাছড়া নিয়ে গিয়ে খাওয়ায়েছে তবু গর্ভপাত ঘটেনি। পরে রিয়াজের কথায় বাধ্য হয়ে মার্চের প্রথমেই গর্ভপাত ঘটাতে মনিকা খাতুন আলমডাঙ্গার কণা নার্সিং হোমে যায়। সে সময় কর্তব্যরত চিকিৎসককে বলে, গর্ভে সন্তান আসার পর স্বামী তাকে তালাক দিয়েছে। তাই সে গর্ভের সন্তান নষ্ট করতে চায়। মণিকার বক্তব্য শুনে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে গর্ভপাত না ঘটাতে পরামর্শ দিয়ে বলেন, সন্তান ভূমিষ্ঠের হলে তুমি বরং আদালতের কাছে আরও গ্রহণযোগ্যতা পাবে। সন্তানের খোরপোষ দাবি করতে পারবে। চিকিৎসকের এমন মন্তব্যের পর বাধ্য হয়ে বাড়ি ফিরে যায় মণিকা খাতুন।

এরই মাঝে ঘটনা জানাজানি হয়ে পড়ে। ঘটনার সত্যতা জানতে মনিকা ওরফে মনিরা খাতুনের শ্বশুর আনু ফকির গত ৪ মার্চ বউমাকে নিয়ে যান আলমডাঙ্গার শেফা ক্লিনিকে আল্ট্রাসনোগ্রাম করাতে। আল্ট্রাসনোগ্রাম করে জানতে পারেন যে, মনিকা ওরফে মনিরা খাতুন ৯ সপ্তার গর্ভবতী। বাড়ি ফিরে শ্বশুর আনু ফকির বউমাকে বাড়ি থেকে বিতাড়িত করেন। অসহায় মনিরা খাতুন পার্শ্ববর্তি পারকুলা গ্রামের খালা বাড়ি গিয়ে উঠেন। বর্তমানে সে ওই খালা বাড়িতেই অবস্থান করছে।

গ্রামসূত্রে জানা যায়, প্রেমিক প্রবর নায়ক রিয়াজ এ বছর এসএসসি পরীক্ষার্থি। প্রতিবেশি ভাবি মনিরা খাতুন নিজের ঘর ছেড়ে প্রতিদিন রাতে প্রেমিক রিয়াজের ঘরে টিভি দেখত। অনেক রাত অবধি খুনসুটি করতো।

রিয়াজের মা বলেন, “ওই মনিরা বউ নিজের ঘর থেকে প্রতি রাতে আমার ছেলের ঘরে এসে টিভি দেখত। অনেক রাত পর্যন্ত এক সাথে থাকতো। কিন্তু আমার ছেলে অনেক ছোট। তাই সন্দেহ করিনি। আমার ছোট এত ছোট ছেলের বিরুদ্ধে এমন জঘন্য অভিযোগ দেবে আমি ভাবতে পারিনি।”

অভিযুক্ত রিয়াজ জানায়, “ আমার তো ২০টা ভাবি আছে। কারও পেটে বাচ্চা হল না আর মনিরা ভাবির হলো। এ কথা বললেই মানতে হবে। তাহলে অন্য ভাবিদের হল না কেন?”


এদিকে, এ ঘটনাটি গ্রামের মোড়ের চায়ের দোকানে দোকানে মুখরোচক গল্পের উপজীব্যে পরিণত হয়েছে। ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে দুভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে মানুষ। তারা যার যার মত করে সালিশ করে ঘটনার মীমাংসা করতে উদগ্রীব। অবৈধ পরকীয়ার প্রেমিক রিয়াজের পরিবার আর্থিক জরিমানা দিয়ে সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে চায়। অন্যদিকে, মণিকারা খাতুন স্বামীর সংসার থেকে বিতাড়িত হয়ে অনাগত সন্তানের পিতৃ পরিচয় প্রতিষ্ঠা করতে চায়।

সর্বশেষ খবর
menu-circlecross-circle linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram