১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আলমডাঙ্গা সোনালী ব্যাংকে একজনের জমি মর্ডগেজ দেখিয়ে অন্যের নামে ৫ লাখ টাকা লোন উত্তোলন

প্রতিনিধি :
শরিফুল ইসলাম রোকন
আপডেট :
নভেম্বর ২৮, ২০২২
43
বার খবরটি পড়া হয়েছে
শেয়ার :
| ছবি : 

মধুপুরের সেলিমের জমি মর্ডগেজ দেখিয়ে ডাউকী গ্রামের সুরুজের নামে সোনালী ব্যাংকের ৫ লাখ টাকা লোন উত্তোলনের ঘটনায় হুলুস্থুল কান্ড ঘটেছে। নিজের নামে লোন হলেও তাকে টাকা না দিয়ে কেন সেলিমকে দেওয়া হল? সোনালী ব্যাংক আলমডাঙ্গা শাখায় উপস্থিত হয়ে এ প্রশ্ন করলে ক্ষুদ্ধ হয়ে ব্যাংক স্টাফের কয়েকজন সুরুজকে মারধর করার চেষ্টা করেন। তাকে ধরতে তাড়া করেন স্বয়ং ব্যাংকের ম্যানেজার। দৌড়ে আত্মরক্ষা করেন অল্পবুদ্ধিসম্পন্ন প্রতারিত যুবক সুরুজ আলী।


জানা যায়, আলমডাঙ্গা উপজেলার ডাইকী গ্রামের গোলাপ আলীর ছেলে সুরুজ আলী (১৮)। সুরুজ একটু বেশি সরলসোজা প্রকৃতির। গ্রামের আর দশটা ছেলের সাথে তাল মিলিয়ে মাঠে কাজ করতে পারেন না। সেকারণে বাবা-মা তাকে আলমডাঙ্গার হাউসপুর এলাকায় একটা ছোট মুদিখানা দোকান করে দিয়েছেন। বর্তমানে দোকানে সাকুল্যে ৫০ হাজার টাকার মালামাল রয়েছে। মধুপুরের সেলিম ফুসলিয়ে সুরুজ আলীকে সোনালী ব্যাংক আলমডাঙ্গা শাখা থেকে লোন নিতে রাজি করান। ব্যাংকে নিয়ে পরিচয় করিয়ে দেন ব্যাংকের স্টাফ এনামুলের সাথে। লোনের ব্যাপারে সার্বিক সহযোগিতা করেন আইও ব্যাংক স্টাফ এনামুল হক। এনামুল হকের বলে দেওয়া দিনে লোনের টাকা উত্তোলনের জন্য ব্যাংকে গিয়ে হাজির হন সুরুজ। সুরুজ যথারীতি নিজ নামে লোনের টাকা উত্তোলনও করেন। উত্তোলন প্রক্রিয়া আইও এনামুল হক তার টেবিলে ডেকে নিয়ে উত্তোলিত লোনের সমস্ত টাকা সুরুজের হাত থেকে নিয়ে নেন। পরে আর সুরুজকে টাকা দেননি।


সুরুজ আলী জানান, "আইও এনামুল হক আমার হাত থেকে টাকা নিয়ে সেলিম আর সে ভাগ করে নেয়। আমার টাকা কেন সেলিমকে দিচ্ছেন তা জিজ্ঞেস করলে আইও বলেছে সেলিমের জমি মর্ডগেজ দেখিয়েছি। তাই টাকা সে পাবে।"


সুরুজ আরও জানান, এ ঘটনা গ্রামে গিয়ে জানালে সকলে বলেন যে, আমাকেই ওই ৫ লাখ টাকা ব্যাংকে সুদে আসলে পরিশোধ করতে হবে। এ কথা জেনে আমি ব্যাংকে যায়। ব্যাংক স্টাফ এনামুল হক ও ম্যানেজারকে বলি। কিন্তু কাজ হয়নি। রবিবার ব্যাংকে গেলে তারা রাগারাগি শুরু করে। আমাকে মারতে হুমকি দেয়। ধরতে তেড়ে আসে। আমি প্রাণে বাঁচতে দৌড়ে পালিয়ে আসি।"


এ অনিয়মের সাথে সরাসরি আই ও এনামুল হক জড়িত বলে প্রত্যক্ষদর্শী অনেকে মন্তব্য করেন। তাদের দাবি রবিবার বেলা ১১ টার দিকে সোনালী ব্যাংকের ভেতরে এ অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। প্রতারিত অল্প বয়স্ক ওই ছেলের সাথে ব্যাংকের ম্যানেজারও বাজে আচরণ করেন। তিনি বেঁধে রাখাসহ নানা ধরণের ভীতি প্রদর্শন করেন। সোনালী ব্যাংকের মত গুরুত্বপূর্ণ ব্যাংকের ম্যানেজারের এমন আচরণ অনাকাংখিত। এমন আচরণ অনিয়মের সাথে ম্যানেজারের সম্পর্ক থাকতে পারে বলেও অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন।


সোনালী ব্যাংক আলমডাঙ্গা শাখার ব্যবস্থাপক আব্দুল আওয়াল জানান, এ বিষয়ে কথা হয়েছে। গ্যারান্টার সেলিম টাকা ফেরত দিবেন। আর সুরুজ আলী ছোট ভাইয়ের মত। তাকে মারতে নয়, একটু বকাঝকা করেছি। তবে ধরতে তাড়া করার কথা সঠিক না।


সোনালী ব্যাংক, চুয়াডাঙ্গা -মেহেরপুরের ডিজিএম নাজমুল হক জানান, যিনি লোন নিচ্ছেন তিনি টাকা উত্তোলনের পর অন্য কাউকে দিলে ভিন্ন কথা। কিন্তু ব্যাংকের কোন কর্মকর্তা কর্মচারী তা করতে পারেন না। কারও সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করতে পারেন না। ঘটনাটা আমি ভালোভাবে অবহিত হয়ে ব্যবস্থা নেবো।

সর্বশেষ খবর
menu-circlecross-circle linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram