শহীদ বুদ্ধিজীবী ডাক্তার বজলুল হকের ছেলের ইন্তেকাল
না ফেরার দেশে চলে গেলেন আলমডাঙ্গার শহীদ বুদ্ধিজীবী ডাক্তার বজলুল হকের ছেলে আশরাফুল হক সঞ্জু মিয়া। সঞ্জু মিয়া প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি রুহুল ইসলামের ভাগ্নে। গতকাল ২ ডিসেম্বর সকাল ১০টা ৫৫ মিনিটে বার্ধক্যজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে আলমডাঙ্গা হাইরোডস্থ নিজ বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেন। মৃওত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। মৃত্যুকালে তিনি ২ ছেলে ও ১ মেয়ে, স্ত্রী, ভাই-বোনসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
প্রসঙ্গত, আশরাফুল হক সঞ্জু মিয়া আলমডাঙ্গার একমাত্র শহীদ বুদ্ধিজীবী ডাক্তার বজলুল হকের ২য় সন্তান। শহীদ ডাক্তার বজলুল হক বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন। তিনি নিজেই বাড়িতে আশ্রয়কেন্দ্র খুলেছিলেন বলে জানা যায়। আহত মুক্তিযোদ্ধাদের সেবা দিতেন, মুক্তিযোদ্ধাদের খাওয়াতেন। এ জন্য তাকে কারারুদ্ধ করা হয়েছিল। পরিবারের সবাইকে নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছিল। পরিবারের সকলকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করে বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ১৯৭১ সালের ১২ নভেম্বর আলমডাঙ্গা শহরে মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে পাকবাহিনির সম্মুখ যুদ্ধের দিনে বাড়ির উঠানে পাকবাহিনির গুলি করে তাঁকে হত্যা করে। আলমডাঙ্গা দারুস সালামের প্রতিষ্ঠাতা তিনি। তাছাড়া শিক্ষা বিস্তারে তিনি অসামান্য ভূমিকা স্মরণযোগ্য।
শহীদ বুদ্ধিজীবী ডাক্তার বজলুল হকের ছেলে আশরাফুল হক সঞ্জু মিয়াকেও যুদ্ধকালীন জুন মাসে পাকিস্থান পুলিশ ধরে নিয়ে অজ্ঞাত স্থানে আটকে রাখে। পরে সেপ্টেম্বর মাসে যশোরের বন্দিশালা থেকে মুক্তি পেয়ে তিনি বাড়ি ফেরেন।
২ ডিসেম্বর রাত ৯টায় জানাযা শেষে আলমডাঙ্গা দারুস সালাম কবরস্থানে মরহুমের লাশ দাফন করা হয়। অন্যান্যের মধ্যে জানাযায় উপস্থিত ছিলেন – উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র হাসান কাদির গনু, সাবেক পৌর মেয়র আলহাজ্ব মীর মহি উদ্দীন ও এম সবেদ আলী, বর্ষিয়ান সমাজসেবক ডাক্তার আব্দুল হামিদ, আলমডাঙ্গা বণিক সমিতির সভাপতি আরেফিন মিয়া মিলন, সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন, সাবেক সভাপতি মকবুল হোসেন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মীর শফিকুল ইসলাম শফি প্রমুখ।
মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনায় ছোট ভাই বিজিবির সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার ওবাইদুর রহমান মোহন ও প্রাক্তন জেলা ও দায়রা জর্জ মাহবুবুল হক সকলের নিকট দোয়া চেয়েছেন।